সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন (বাঁ দিকে) ও রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। —ফাইল ছলি
গতি হারানো দূর অস্ত্, উল্টে গতি বাড়ছে সারদা-রোজভ্যালি এবং নারদ তদন্তে। সম্প্রতি সিবিআইয়ের ঘরোয়া কোন্দল প্রকাশ্যে আসার পর, তদন্ত গতি হারাবে বলে মনে করেছিলেন এ রাজ্যের একাধিক পুলিশ কর্তা। একই আশঙ্কা ছিল এ রাজ্যে সিবিআই আধিকারিকদেরও।
সিবিআইয়ের অন্দরের খবর, সংস্থার দুই শীর্ষকর্তাকে সরিয়ে দেওয়ার পর বরং, তদন্তে আরও গতি আনার তত্পরতা চলছে। অন্তর্বর্তী অধিকর্তার দায়িত্ব নেওয়ার পরই নাগেশ্বর রাও এ রাজ্যের বিভিন্ন চিটফান্ড মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান।
সূত্রের খবর, বর্তমান অধিকর্তা সারদা-নারদ-রোজভ্যালি মামলার তদন্তকারী আধিকারিকদের ডেকে পাঠিয়েছেন। তাঁদের বলা হয়েছে তদন্ত সংক্রান্ত অগ্রগতির সামগ্রিক নথি নিয়ে যেতে। সোমবারই দিল্লিতে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা রোজভ্যালি মামলার নতুন তদন্তকারী আধিকারিক চোজেন শেরপার।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, রোজভ্যালি তদন্তে কোন কোন রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ীর নাম আসছে, নয়া অধিকর্তা তার তালিকাও চেয়ে পাঠিয়েছেন। এক আধিকারিক বলেন, “জেরায় রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডু বিভিন্ন সময়ে কলকাতার একাধিক নামী ব্যবসায়ীর কথা বলেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন— বিভিন্ন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির চাপে, ওই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তিনি বেশ কিছু আর্থিক লেনদেন করেছিলেন এবং তাতে কার্যত প্রতারিত হয়েছিলেন।” সেই বয়ান খতিয়ে দেখে, অভিযুক্ত ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কতটা যোগাযোগ ছিল বা আছে, তাও খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: ঠগস...কে খোঁচা মেরে প্রবল ট্রোলিংয়ের মুখে কলকাতা পুলিশ
সিবিআই সূত্রে খবর, রোজভ্যালি তদন্ত প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুততার সঙ্গে শেষ করার কথা বলা হয়েছে অধিকর্তার অফিস থেকে। সেই সঙ্গে সারদা মামলায় এখনও পুলিশ কর্তাদের জেরা থমকে কেন, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী অফিসারের কাছে।
সেই সঙ্গে তদন্তের বৃত্তে নিয়ে আসা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবিও। সেই ছবি কোন কোন ব্যক্তি কিনেছিলেন, সেই তালিকাও চেয়ে পাঠিয়েছেন নতুন অধিকর্তা। তদন্তকারী আধিকারিক সমস্ত নথি তৈরি করার জন্য সময় চেয়েছেন। তবে সামনের সপ্তাহেই তিনি দিল্লি যাবেন বলে জানা যাচ্ছে সিবিআই সূত্র থেকে।
আরও পড়ুন: তাড়া করেছে বাঘ, জঙ্গলে ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে হুডখোলা গাড়ি, তার পর...
সময় চেয়ে নিয়েছেন নারদ মামলার তদন্তকারী আধিকারিকও। নারদ তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক বলেন, “এখনও এফআইআরে অভিযুক্তদের কণ্ঠস্বরের নমুনার ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট আসেনি সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে। সেই রিপোর্ট পেলেই অধিকর্তার কাছে তদন্তের সর্বশেষ অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।
সব মিলিয়ে— উপর তলায় সাম্প্রতিক পালাবদলের পর, সিবিআই আধিকারিকরা মনে করছেন, দিল্লি থেকে আরও চাপ বাড়বে চিট ফান্ড মামলা নিয়ে। আর সেই হিসেব করেই এ বার তৈরি হচ্ছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা। কারণ তাঁরাও এ বার নিশ্চিত, এ দফায় জেরা এড়ানো খুব একটা সহজ হবে না।
বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া - পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy