Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Mamata Banerjee

জাগো বাংলার তহবিলের খোঁজে এ বার হানা দিল সিবিআই, জেরা মমতার অফিসের সচিবকে

মমতার আঁকা ছবি বিক্রি করে ঠিক কত টাকা তৃণমূলের দলীয় তহবিলে জমা পড়েছিল, এ দিনের জেরায় সেটাই বারে বারে জিজ্ঞাসা করেছেন গোয়েন্দারা, এমনটাই খবর সিবিআই সূত্রে। গোয়েন্দাদের এরটা অংশের দাবি, রোজভ্যালি তদন্ত এই মুহূর্তে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেখানে ওই তথ্য অনেক বেশি জরুরি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:১৩
Share: Save:

রোজভ্যালি-কাণ্ডের তদন্তে এবার সিবিআইয়ের ‘ফোকাস’ তৃণমূলের দলীয় মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র তহবিল। সে কারণেই বৃহস্পতিবার সিবিআই আধিকারিকরা জেরা করলেন মানিক মজুমদারকে। ওই মুখপত্রের যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তার তিন স্বাক্ষরকারীর মধ্যে অন্যতম মানিকবাবু। পাশাপাশি তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির অফিসটি সামলানোর দায়িত্বেও রয়েছেন।

এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ গোয়েন্দারা মানিক মজুমদারের বাড়িতে হানা দেন। কালীঘাটেরই দেবনারায়ণ ব্যানার্জি রোডের সেই বা়ড়িতে সিবিআই গোয়েন্দারা ঘণ্টা তিনেক কাটান। দুপুর সওয়া দুটো নাগাদ তাঁরা সেখান থেকে বেরোন। রেকর্ড করা হয় মানিক মজুমদারের বয়ানও।

সিবিআই সূত্রের খবর, ‘জাগো বাংলা’র তহবিলে মমতার আঁকা ছবি থেকে ঠিক কত টাকা জমা পড়েছিল, কারা সেই ছবি কিনেছিলেন—এ সব খুঁজে বার করাই এখন কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাখির চোখ।

এর আগে গত ডিসেম্বর মাসেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানা ৩০বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে চিঠি দিয়ে মানিক মজুমদার, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং জাগো বাংলার প্রকাশক তথারাজ্যসভার সাংসদ ডেরেকও’ব্রায়েনকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে তলব করে সিবিআই। সিবিআইয়ের যুক্তি ছিল, সুব্রত বক্সি এবং মানিক মজুমদার ‘জাগো বাংলা’র তহবিলের দায়িত্বে। সেই কারণেই তাঁদের ডাকা হয়েছিল। সেই সময়ে সুব্রত বক্সি সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে দলীয় মুখপত্রের তহবিল সংক্রান্ত নথি জমা দিয়ে আসেন। তাঁর বক্তব্যও রেকর্ড করেন গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন: নিশানায় বেকারত্ব রিপোর্ট! মোদীকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা রাহুলের, জবাবে ‘মুসোলিনি’ কটাক্ষ বিজেপির

সিবিআই সূত্রে খবর, গোয়েন্দাদের কাছে সুব্রত বক্সির চেয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানিকবাবুর বয়ান। কারণ, প্রায় ৪০ বছর ধরে মমতার বাড়ির অফিসে সচিবের কাজ করা মানিকবাবু জন্ম থেকে ওই মুখপত্রের তহবিলের খুঁটিনাটি জানেন। সেই কারণে তাঁকে বার বার তলব করা হয়। গোয়েন্দাদের দাবি, শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দু’বার নোটিস অগ্রাহ্য করেন মানিকবাবু। তিনি সিবিআই দফতরে হাজিরাও এড়িয়ে যান। তাই এদিন গোয়েন্দারা নিজেরাই চলে যান মানিকবাবুর কাছে।

মমতার আঁকা ছবি বিক্রি করে ঠিক কত টাকা তৃণমূলের দলীয় তহবিলে জমা পড়েছিল, এ দিনের জেরায় সেটাই বারে বারে জিজ্ঞাসা করেছেন গোয়েন্দারা, এমনটাই খবর সিবিআই সূত্রে। গোয়েন্দাদের এরটা অংশের দাবি, রোজভ্যালি তদন্ত এই মুহূর্তে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেখানে ওই তথ্য অনেক বেশি জরুরি। এক সিবিআই আধিকারিক ব্যাখ্যা করেন,“জেলবন্দি এসভিএফ কর্তা শ্রীকান্ত মোহতাকে জেরা করার জন্যও ওই তথ্য প্রয়োজন।”

আরও পড়ুন: পাখির চোখ গ্রাম ভারতে, ভোটের আগে কাল জনমোহিনী হবেন মোদী?

সিবিআইয়ের অভিযোগ, রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুকে প্রতারণা করে যে টাকা নিয়েছিলেনশ্রীকান্ত মোহতা, সেই টাকার একটা বড় অংশ দিয়ে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি কিনেছিলেন। শুধু নিজে কেনাই নয়, গৌতম কুণ্ডুর মতো আরও কয়েকজন চিট ফান্ডে অভিযুক্তকে শ্রীকান্ত প্রভাবিত করেছিলেন মমতার আঁকা ছবি কিনতে। সেই কারণেই মানিকবাবুর বয়ানের সঙ্গে গোয়েন্দারা এখনও পর্যন্ত পাওয়া সাক্ষ্য প্রমাণ মিলিয়ে দেখতে চান।

অন্যদিকে, এ দিন ফের নোটিস পাঠানো হয়েছে ডেরেকও’ব্রায়েনকে। জাগো বাংলার প্রকাশক হিসাবে তাঁর বয়ানও খুব গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দাদের কাছে।

গত ২৯ জানুয়ারি মমতার আঁকা ছবি বিক্রি নিয়ে কাঁথির সভায় মন্তব্য করেছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তিনি কটাক্ষ করে বলেছিলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বিক্রি হয় কোটি কোটি টাকায়। সেই ছবি কেনেন চিটফান্ড মালিকরা।” অমিতের ওই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান মমতা। বিজেপি সভাপতিকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মানহানির মামলার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘মোদীবাবু, ছবি এঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক পয়সা আয় করেছে প্রমাণ করুন।’’

(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee CBI Jago Bangla Chit Fund
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE