ফাইল চিত্র।
মেধা-তালিকা নিয়ে অভিযোগ ঘিরে এর আগে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। প্রার্থীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ, মামলা-মকদ্দমায় বিলম্বিত হয়েছিল নিয়োগ প্রক্রিয়া। পুজোর আগে-পরে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষকপদ পূরণের ঘোষণার পরে বিশেষত উচ্চ প্রাথমিকের প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের তালিকা ঘিরে ফের শুরু হয়েছে অভিযোগের পালা। ওই তালিকা প্রকাশিত হয়েছে সোমবার। আর তার পরের দিন, মঙ্গলবারেই অস্বচ্ছতার অভিযোগ নিয়ে সল্টলেকে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র অফিসে হাজির হন এক দল প্রার্থী।
উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ এ দিন অভিযোগ করেন, ইন্টারভিউয়ের তালিকায় নাম ওঠার জন্য ন্যূনতম যে-যোগ্যতা থাকা আবশ্যিক, তা তো আছেই। তার থেকেও বেশি যোগ্যতা আছে অনেক প্রার্থীর। তা সত্ত্বেও তাঁদের নাম ঘোষিত ইন্টারভিউ তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়নি। কী কারণে এমনটা হল, তা জানতে কমিশনের হেল্পলাইনে বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী ফোন করেছিলেন। প্রার্থীদের কয়েক জন আবার জানান, তাঁরা হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে পারেননি। যাঁরা যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন, তাঁদের মধ্যে নাম বলতে অনিচ্ছুক এক চাকরিপ্রার্থী জানান, হেল্পলাইন থেকে তাঁকে বলা হয়েছে, তাঁর স্নাতকের মার্কশিট জমা পড়েনি। কিন্তু ওই চাকরিপ্রার্থীর দাবি, স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে তাঁর যাবতীয় নথিপত্র জমা পড়ে গিয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। এ দিন যাঁরা অভিযোগ জানাতে কমিশনের দফতরে গিয়েছিলেন, তাঁদের অভিযোগপত্র জমা নেওয়া হয়েছে বলে জানান কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী।
অস্বচ্ছতার অভিযোগ ছাড়াও কোচবিহারের এক চাকরিপ্রার্থী জানান, ইন্টারভিউয়ের তালিকায় প্রার্থীদের মোট নম্বরের উল্লেখ করা হয়নি। তিনি বলেন, “তালিকায় প্রার্থীর নামের পাশে মোট নম্বর লেখা থাকলে ভাল হত। আদালতের নির্দেশে তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে। তাই সেই তালিকায় আরও স্বচ্ছতা আশা করেছিলাম। আমি ইন্টারভিউয়ে বাদ যেতেই পারি। কিন্তু কেন বাদ পড়ছি, তার কারণ আমাকে জানানো হবে না কেন?” ওই প্রার্থীর অভিযোগ, তাঁর টেট এবং অ্যাকাডেমিক নম্বর মিলিয়ে মোট নম্বর যা দাঁড়াচ্ছে, তার থেকে কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীর নাম উঠেছে ইন্টারভিউয়ের তালিকায়।
এ দিন ‘টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট’ বা টেটের যে-তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেই তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের কেউ ২০১২ সালে টেট দিয়েছেন, কেউ দিয়েছেন ২০১৪ সালে। টেটের প্রথম মেধা-তালিকা প্রকাশ হয় ২০২০ সালে। কিন্তু স্বচ্ছতার অভিযোগে মামলা হওয়ায় সেই প্যানেল বাতিল করে পুনরায় ইন্টারভিউ নিয়ে নতুন ভাবে প্যানেল তৈরি করতে বলে কলকাতা হাই কোর্ট। কিছু প্রার্থীর দাবি, প্রথম বার ইন্টারভিউয়ের যে-তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে তাঁদের নাম ছিল।
আপার প্রাইমারি সংগ্রামী মঞ্চের তরফে অর্পিতা প্রামাণিক বলেন, “২০১২ সাল থেকে এই চাকরিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। শূন্য পদ কিন্তু একই থেকে যাচ্ছে। যাঁরা ২০১২ সালে টেট দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকের বয়স চাকরি পাওয়ার শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছে। শূন্য পদ না-বাড়ায় বিপুল সংখ্যক চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে।” অর্পিতাদেবীর আরও অভিযোগ, যদি নিয়মিত টেট নেওয়া হত, তা হলে চাকরির সুযোগ অনেক বাড়ত।
প্রার্থীদের নানান অভিযোগ নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বক্তব্য জানতে এসএসসি-র চেয়ারম্যান শুভশঙ্কর সরকারকে ফোন ও মেসেজ করা হয়। কিন্তু কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy