কারণ জানানো না হলে গ্রেফতার বেআইনি। কী কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তকে তা জানাতে হবে। তদন্তকারী সংস্থা গ্রেফতারের কারণ জানাতে বাধ্য। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের কারণ না বলার জন্য মুক্তি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ, অভিযুক্তকে অবিলম্বে জামিন দিতে হবে। তাঁর গ্রেফতারি বৈধ নয়। হাই কোর্টের ওই নির্দেশ মেনে পুলিশ হেফাজত থেকে ছাড়া পেয়েছেন ওই অভিযুক্ত।
গত ১৪ মার্চ সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে নিউ ব্যারাকপুরের দীপককুমার দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্বামীর মুক্তি চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন স্ত্রী মিনু দাস। তাঁর বক্তব্য, আগের দিন রাতে স্বামীকে ডেকে নিয়ে যায় পুলিশ। তাঁকে থানায় আটকে রাখে। পরের দিন গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের কারণ স্পষ্ট নয়। স্ত্রীর আবেদন, তাঁর স্বামীকে মুক্তি দেওয়া হোক। হাই কোর্টে মামলাকারী মিনুর আইনজীবী সৌমজিৎ দাস মহাপাত্রের সওয়াল, বেআইনি ভাবে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে যে সব ধারা দেওয়া হয়েছে তাতে সর্বোচ্চ সাজা সাত বছর। ফলে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস)-র ৩৫(২) ধারা অনুযায়ী, পুলিশের আগে নোটিস পাঠানো উচিত ছিল। নোটিস না দিয়ে সরাসরি গ্রেফতার করা হয়েছে। রাত দেড়টা নাগাদ গ্রেফতারের সময় দেখানো হয়েছে। তখন ঘুমের সময়। এক জন ব্যক্তিকে ঘুমের অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
হাই কোর্ট জানায়, অভিযোগের সারবত্তা নিয়ে আদালত কোনও মন্তব্য করবে না। কিন্তু গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। পুলিশের এমন আচরণ কোনও ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ, গ্রেফতার এবং গ্রেফতারের কারণ দু’টি এক বিষয় নয়। অপরাধের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা যেতেই পারে। কিন্তু কোন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেফতার তা জানানো দরকার। অভিযুক্তকে কোনও ভাবেই আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। এর পরেই হাই কোর্ট ওই অভিযুক্তকে জামিন দেওয়ার নির্দেশ দেয়।