চিনের পর এ বার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ঢিলের বদলে আমেরিকার দিকে পাটকেল ছুড়ল ২৭টি ইউরোপীয় রাষ্ট্রের এই সমবায়। বুধবার সদস্যরাষ্ট্রগুলির মতামত নিয়ে ইইউ জানিয়ে দিল, আমেরিকার ২৩০০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি) অর্থমূল্যের সম্পদে শুল্ক বসাতে চলেছে তারা।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ইইউ-র এই সিদ্ধান্তে ইউরোপের বাজার হারাতে পারে আমেরিকার সোয়াবিন, হিরে, কৃষিজাত পণ্য এবং মোটরবাইক। কারণ নতুন করে আমদানি শুল্ক চাপানো হলে ইউরোপের বাজারে দাম বাড়বে ওই পণ্যগুলির। ফলে ইউরোপে উৎপাদিত পণ্যগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এঁটে ওঠা কার্যত অসম্ভব হবে মার্কিন পণ্যগুলির।
শুল্কযুদ্ধের সূচনাটা অবশ্য করেছিলেন ট্রাম্পই। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি থেকে আমেরিকায় রফতানি হওয়া স্টিল এবং অ্যালুমিনিয়ামের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছিলেন তিনি। তার পরেই ইইউ-র সদস্য দেশগুলি থেকে আমেরিকা থেকে আমদানি হওয়া পণ্যে পাল্টা শুল্ক চাপানোর দাবি ওঠে। বুধবার একটি বৈঠকে ইইউ-র ২৭টি সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে অধিকাংশই শুল্ক চাপানোর পক্ষে মত দেয়। আমেরিকার কোন পণ্যে কত শুল্ক চাপতে চলেছে, তা স্পষ্ট না হলেও, জানা গিয়েছে পাল্টা এই শুল্কনীতি কার্যকর হবে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকেই।
শুল্ক নিয়ে ট্রাম্প যত সুর চড়াচ্ছেন, ততই পাল্টা পদক্ষেপ করার পথে হাঁটছে চিন, কানাডার মতো দেশগুলিও। ট্রাম্প অবশ্য জানিয়েছেন, বেশ কিছু দেশ শুল্কের বোঝা লাঘব করতে চেয়ে তার সঙ্গে আলোচনাতেও বসতে চেয়েছে। সে ক্ষেত্রে তিনি যে কিছুটা নমনীয় হবেন, সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন:
চলতি বছরের শুরুর দিকেই চিনা পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। তার উপরে আরও ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। আমেরিকার ওই সিদ্ধান্তের পর পাল্টা শুল্ক চাপায় চিনও। চিনের বাজারে মার্কিন পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপায় তারা। ওই পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহার না-হলে বুধবার চিনের উপর আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। বুধবার সেই হুঁশিয়ারি কার্যকরও করে ট্রাম্প প্রশাসন। তাতে চিনকে দমানো যায়নি। পাল্টা হুমকির সুরে বেজিংও জানিয়েছিল, ভুলের উপর ভুল করছে আমেরিকা।
বুধবার চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংয়ের প্রশাসন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে মার্কিন পণ্যের উপর তারা ৮৪ শতাংশ হারে শুল্ক নেবে। এর আগে মার্কিন পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বেজিং। এ বার তা আরও ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে তারা।