Advertisement
E-Paper

নয়া ওয়াকফ সংশোধনী আইনে স্থগিতাদেশ চেয়ে শীর্ষ আদালতে মহুয়া, প্রথম অমুসলিম মহিলা হিসাবে মামলা তৃণমূল সাংসদের

মঙ্গলবার ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে ‘চমৎকার আইন’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাল্টা সরব হয়েছেন তৃণমূলের সর্বময়নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারই মামলাটি দায়ের করেছেন মহুয়া মৈত্র।

আগামী ১৬ এপ্রিল মহুয়া মৈত্রের দায়ের করা মামলাটির শুনানি হতে পারে সুপ্রিম কোর্টে।

আগামী ১৬ এপ্রিল মহুয়া মৈত্রের দায়ের করা মামলাটির শুনানি হতে পারে সুপ্রিম কোর্টে। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ২১:৩৭
Share
Save

ওয়াকফ সংশোধনী আইনের একটি নির্দিষ্ট ধারায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বিল আইনে পরিণত হওয়ার পর থেকে অনেকেই মামলা করেছেন শীর্ষ আদালতে। তবে অমুসলিম প্রথম মহিলা হিসাবে মামলা করলেন মহুয়া। এর আগে অমুসলিম হিসাবে একমাত্র মামলা দায়ের করেছেন লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডির সাংসদ মনোজ ঝা।

মহুয়া তাঁর পিটিশনে স্পষ্টই উল্লেখ করেছেন, যে প্রক্রিয়ায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাশ করানো হয়েছে, তা সাংসদীয় রীতির পরিপন্থী। উল্লেখ্য, বিরোধীদের চাপেই ওয়াকফ বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) গঠন করা হয়েছিল। যার চেয়ারম্যান ছিলেন বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পাল। তাঁর ভূমিকা, নিরপেক্ষতা নিয়ে ইতিমধ্যেই বহুবার প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। ওয়াকফ সংক্রান্ত জেপিসির বৈঠক বারংবার তপ্ত হয়েছে, ভেস্তে গিয়েছে। সেই চেয়ারম্যানের ভূমিকাও পিটিশনে উল্লেখ করেছেন মহুয়া। সাংসদদের রিপোর্টের প্রতিলিপি দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যে ভাবে সংশোধনী দিতে বলা হয়েছিল, তাকে ‘অবাস্তব’ বলে মহুয়া আদালতের গোচরে আনতে চেয়েছেন।

নতুন আইনের নির্দিষ্ট একটি ধারাতেও স্থগিতাদেশ চেয়েছেন মহুয়া। ৩(সি) ধারায় স্থগিতাদেশ চাওয়ার যুক্তি হিসাবে তৃণমূল সাংসদের তরফে জানানো হয়েছে, ‘বেআইনি সম্পত্তি’ বলে এক বার কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করে নিলে, তা আর ফেরানো যাবে না। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ সরকার ‘বেআইনি ওয়াকফ সম্পত্তি’ বাজেয়াপ্ত করা শুরু করেছে। লোকসভার পরে গত ৩ এপ্রিল মধ্য রাতে রাজ্যসভায় ওয়াকফ বিল পাশ হয়েছিল। ৫ এপ্রিল রাতে তাতে সই করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তার পরেই তা আনুষ্ঠানিক ভাবে আইনে পরিণত হয় এবং কেন্দ্রীয় সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু বাস্তবে উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন তত দিন পর্যন্ত অপেক্ষাই করেনি। ৪ এপ্রিল থেকেই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে।

সংবিধান প্রদত্ত সাম্যের অধিকার, ধর্ম, জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ বা জন্মস্থানের ভিত্তিতে বৈষম্যের নিষেধাজ্ঞা, সংগঠন বা সমিতি তৈরির স্বাধীনতা, জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার সংক্রান্ত ধারা উল্লেখ করে মহুয়া তাঁর বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নতুন আইনের মাধ্যমে এগুলি লঙ্ঘিত হচ্ছে। আগামী বুধবার (১৬ এপ্রিল) এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে আশা করছেন মহুয়া।

গোড়া থেকেই বিরোধী দলগুলি বলছে, ওয়াকফ ব্যক্তিগত আইন। সংশোধনের মধ্যে দিয়ে আসলে ব্যক্তিগত আইনকে সর্বজনীন করা হয়েছে। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ তাঁর পিটিশনে সংবিধানের ধারা উল্লেখ করে, কী ভাবে তা লঙ্ঘিত হচ্ছে, তারও বর্ণনা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে ‘চমৎকার আইন’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাল্টা সরব হয়েছেন তৃণমূলের সর্বময়নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল হিসাবে তৃণমূল প্রথম থেকেই ওয়াকফ বিলের প্রতিবাদ করছে। মুসলিমদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে বুধবার মমতা বলেছেন, ‘‘আমি জানি ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে সংখ্যালঘুদের মনে একটা দুঃখ আছে। আপনারা ভরসা রাখুন, বাংলায় এমন কিছু হবে না যাতে বিভাজন হয়। সবাইকে একসঙ্গে থেকে বাঁচতে হবে। জিও ঔর জিনে দো (বাঁচুন ও বাঁচতে দিন)।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘আপনারা সবাই একসঙ্গে বাঁচার কথা বলুন। কেউ কেউ রাজনৈতিক প্ররোচনা দেয়। আমি বলছি, দিদি আছে, দিদি আপনাদের রক্ষা করবে। আপনাদের সম্পত্তি রক্ষা করবে। কেউ উস্কানিতে পা দেবেন না।’’ কাকতালীয় ভাবে বুধবারই সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেছেন মহুয়া।

Waqf Bill WAQF Amendment Law Mahua Moitra TMC Mamata Banerjee

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}