জলের অধিকার ক্ষুণ্ণ হলে মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারও ক্ষুণ্ণ হয়। পানীয় জলের সংযোগ না দেওয়ার কারণে পুরসভার উদ্দেশে এমনই মন্তব্য করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের ওই মন্তব্যের পরই নড়েচড়ে বসল চাকদহ পুরসভা। জলের সমস্যা যে ছিল তা স্বীকার করেই জানাল, শীঘ্রই তারা ৪০০ পরিবারের কাছে জল পৌঁছে দেবে।
বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ চেয়ে অরুণকুমার রায় নামে নদিয়ার এক ব্যক্তি চাকদহ পুরসভায় আবেদন করেন। তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দিতেও তিনি রাজি ছিলেন। কিন্তু বাড়িতে জলের সংযোগ দিতে অস্বীকার করে পুরসভা। তারা জানায়, জল নিতে হলে ৬০ ফিট দূরে মূল সংযোগ থেকেই নিতে হবে। এখন বাড়িতে জল পৌঁছনো কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। পুরসভার ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন অরুণ। গত নভেম্বরে ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি শম্পা সরকার মন্তব্য করেন, ‘‘এক ব্যক্তি পানীয় জল পাচ্ছেন না। এটা নীতিগত ভাবে আদালতের কাছে আঘাত। এই ধরনের পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘উন্নয়নশীল দেশ বা অর্থনীতিতে দাঁড়িয়ে মানুষ পানীয় জল পাবেন না, বিশেষ করে পুরসভা এলাকায় এটা আশা করা যায় না।’’ এমনকি এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যকেও গুরুত্ব দিতে বলে আদালত।
ওই এলাকায় শুধু অরুণ নন, জলের সমস্যায় রয়েছেন আরও অনেক পরিবারের মানুষ। তাঁরা বার বার পুরসভার কাছে আবেদন করেছেন। কোনও লাভ হয়নি। এর পর গত বৃহস্পতিবার ফের ওই মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে আদালতে। সেখানে পুরসভা নিজেদের ত্রুটি মেনে নেয়। তারা জানায়, ওই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে তারা তৎপর। শীঘ্রই ৪০০ আবেদনকারীকে পর্যাপ্ত জলের জোগান দেওয়া হবে। রাজ্যের তরফ থেকেও ওই পুরসভায় পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হবে বলে আদালতকে আশ্বস্ত করেছে। যারপরনাই আদালতও সন্তোষ প্রকাশ করে রাজ্য ও পুরসভার এই পদক্ষেপে। এ প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী কল্লোল বসু বলেন, ‘‘প্রত্যেক মানুষের পানীয় জলের অধিকার রয়েছে। তা থেকে বঞ্চিত না হওয়াটাই বাঞ্চনীয়। এখন খুব শিগগিরি ওই সমস্যার সমাধান হলে ভাল।’’