Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Calcutta High Court

কালীপুজোতেও হাইকোর্ট দেখাতে হবে কি বাঙালিকে

রাজ্যের বিভিন্ন জেলা শহর ও শহরতলির কালীপুজোতেও ভিড় হয়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৫০
Share: Save:

দুর্গাপুজোর অষ্টমী-নবমীর ভিড়ে জনসচেতনতার ছবি দেখা যায়নি। এমনকি, বহু জায়গায় বিভিন্ন পুজো কমিটির বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে দর্শকদের মণ্ডপের ভিতরে ঢোকানোর অভিযোগও উঠেছে। তার ফলে উৎসবের মরসুমে সংক্রমণ ঠেকানোর যে উপায় বেছে নেওয়া হয়েছিল তা কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জেলায় জেলায় বিসর্জনের সময়েও পথে যে ভিড় দেখা গিয়েছে, তা মনে করিয়ে অনেকেই বলছেন, রাজ্যের বিভিন্ন জেলা শহর ও শহরতলির কালীপুজোতেও ভিড় হয়। বহু ক্ষেত্রে প্রশাসনের তেমন নিয়ন্ত্রণও থাকে না। ফলে কালীপুজোয় ফের ভিড় হলে সমূহ বিপদ। কালীপুজোর ভিড় ঠেকাতেও হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

তবে রাজ্য প্রশাসন মনে করে, নবমী এবং দশমীতে কিছুটা ভিড় হলেও আদালতের রায়, পুলিশ এবং প্রশাসনের ভূমিকায় দুর্গাপুজোয় সামগ্রিক ভাবে বড় ধরনের জমায়েত এড়ানো গিয়েছে। রাজ্য সরকারের অভিমত, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যখন পুজো উদ্যোক্তাদের বৈঠক হয়, তখনই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, মণ্ডপ খোলামেলা হতে হবে, মানতে হবে যাবতীয় সতর্কতা বিধি। পরবর্তীতে যে পরিস্থিতি হল, তাতে মণ্ডপ দর্শকশূন্য থাকলেও উৎসবের শহরে মানুষ বেরিয়েছিলেন। তবে ভিড় হলেও নাগরিকেরা সচেতন ছিলেন। সুরক্ষা বিধি নিয়ে চলেছে লাগাতার প্রচারও। তাই পুলিশ-প্রশাসন দাঁড়িয়ে দেখেছে, এটা বললে সত্যের অপলাপ হবে। তাই দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি কালীপুজোতেও রাখতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন।

আরও পড়ুন: উৎসবের কারণে পশ্চিমবঙ্গে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়েছে: কেন্দ্র

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিজয়ার মতোই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এ বছর কালীপুজো হবে একেবারে ঘরোয়া ভাবে। মণ্ডপ বাঁধা হবে না। পরিবারের সদস্য ছাড়া পুজোয় কেউ থাকবেন না। থাকবে না আলোকসজ্জাও।

তবে অনেকেরই মতে, ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন এলাকায় ভিড় ঠেকাতে দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তা, পুলিশের একাংশ বা স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সক্রিয়তা চোখে পড়েনি। তেমন অতিমারি আবহে রাস্তায় ভিড় করার মধ্যে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবও ছিল চোখে পড়ার মতো।

কোভিড অতিমারির মধ্যে দুর্গাপুজোর অনুমতি দিলেও সব পুজো কমিটিগুলির জন্য নির্দিষ্ট বিধি প্রকাশ করেছিল রাজ্য সরকার। তার পর কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। মণ্ডপে দর্শক ঢোকার নিষেধাজ্ঞা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আদালত নির্দিষ্ট রায় দেয়। তাতেই তৃতীয়া থেকে সপ্তমী পর্যন্ত ভিড় বেশ নিয়ন্ত্রণে ছিল।

আরও পড়ুন: এক জন ‘সুপার স্প্রেডারে’ আক্রান্ত কত, বাড়ছে শঙ্কা

তবে অষ্টমী, নবমী এবং দশমীতে ভিড় কিছুটা বাড়ে। শহরতলির ট্রেন বন্ধ থাকায় আগের বছরগুলির মতো ভিড় না-হলেও গত তিন দিনে যে ভিড় রাস্তায় দেখা গিয়েছে, তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়েছে বই কমেনি। সদ্য পুজো শেষ হয়েছে, তাই ভিড়ের ফলাফল বুঝতে এখনও কয়েক দিন লাগবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা।

অনেকেই বলছেন, আদালতের দুর্গাপুজোর নিষেধাজ্ঞা অনুসারে কালীপুজোর নিয়মবিধি প্রকাশ করার দরকার রয়েছে। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ দেবকিশোর গুপ্ত বলেন, “দুর্গাপুজোয় প্রশাসনের ভূমিকা ভাল ছিল। সর্বোপরি কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে খুব সুবিধা হয়েছে। সেই ব্যবস্থাপনারই পুনরায় প্রয়োগ দরকার।” প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “প্রশাসন যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। সচেতন থাকতে হবে মানুষকেও।”

প্রশাসন সূত্রের বক্তব্য, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত, নৈহাটির মতো এলাকায় কালীপুজো খুবই জনপ্রিয়। আশপাশের জেলা থেকেও দর্শনার্থীদের ঢল নামে ওই এলাকার মণ্ডপগুলিতে। পাশাপাশি কালীপুজোর আগে বিভিন্ন জায়গায় বাজির এবং আলোর পসরা নিয়ে বাজার বসে। প্রবল ভিড় হয় সেই জায়গাগুলিতেও। এখনও চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি না-হলেও কোভিড অতিমারির মধ্যে কালীপুজোর এমন সব দিক বিবেচনায় রেখে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy