Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Medical College recruitment Case

‘শাহজাহানকে ধরা গেল?’ পুলিশে অনাস্থা, মেডিক্যাল তদন্তও সিবিআইকে দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠেছিল রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত মামলা। সেই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:২২
Share: Save:

রাজ্যের পুলিশে কোনও আস্থা নেই কলকাতা হাই কোর্টের, সরাসরিই জানিয়ে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর এই যুক্তিতেই রাজ্যের আরও একটি দুর্নীতির মামলার তদন্তভার তিনি দিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকেই।

বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠেছিল রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত মামলা। সেই মামলাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এজলাসে বসেই তিনি বলেন, ‘‘মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি নিয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে, তার তদন্ত করবে সিবিআই। এই ঘটনায় যদি কোনও আর্থিক দুর্নীতি হয়ে থাকে, তবে তা-ও সামনে আসা দরকার।’’

বিচারপতির এই নির্দেশের পরেই রাজ্যের তরফে তীব্র আপত্তি তোলেন রাজ্যের এজি। কিন্তু বিচারপতি তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘শাহজাহানকে আপনাদের পুলিশ গ্রেফতার করতে পেরেছে? রাজ্যটা দিনে দিনে কয়েক জন দুর্নীতিগ্রস্তের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে। অথচ এত কিছুর পরেও পুলিশের তরফে কোনও সদর্থক ভূমিকা চোখে পড়ছে না। এ রাজ্যের পুলিশ কর্তৃপক্ষের উপর তাই এই আদালতের কোনও আস্থা নেই। দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তভার তাই সিবিআইকেই দেওয়া যথাযথ মনে করছে আদালত।’’

এমবিবিএস পরীক্ষায় ভুয়ো শংসাপত্র ব্যবহার করে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে আদালতে মামলা করেছিলেন ইতিশা সোরেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, ‘‘তফসিলি উপজাতি না হওয়া সত্ত্বেও অনেক পড়ুয়া ভুয়ো শংসাপত্র ব্যবহার করে সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছেন। ওই সরকারি কলেজের তালিকায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেরও নাম রয়েছে।’’

বুধবার এই মামলাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি মামলাকারীর আইনজীবীকে বলেছেন, সিবিআইকে যেন এই মামলায় যুক্ত করা হয়। পাশাপাশি রাজ্যের আপত্তি প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘‘ এই মামলাটি চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে আবার যেতে পারে। তাই রাজ্যের কাছে আমি আশা করব এখনও পর্যন্ত সিবিআই তদন্ত আটকাতে কত টাকা খরচ করা হয়েছে তা তারা জানাবে।’’

প্রসঙ্গত, মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির এই মামলাটি গত বছর থেকেই চলছে বিচারপতির এজলাসে। চিকিৎসক হওয়ার প্রশিক্ষণে অযোগ্যেরা গুরুত্ব পেয়েছেন জেনে আদালতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মামলাকারী আদালতে যে ৫০ জনের নাম জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকের শংসাপত্র খতিয়ে দেখতে বলেন বিচারপতি। গত ১৬ অক্টোবর ওই ৫০ জনকে মামলায় যুক্ত করারও নির্দেশও দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পাশাপাশি রাজ্যের স্ক্রুটিনি কমিটিকে বলেছিলেন বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য।

৩০ নভেম্বরের মধ্যে এই খতিয়ে দেখার কাজ সম্পন্ন করতে বলেছিলেন বিচারপতি। গত ১৪ ডিসেম্বরে রাজ্য জানায়, এমন ১৪ জন প্রার্থীকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, যাঁরা ভুয়ো শংসাপত্র ব্যবহার করেছিলেন। বিচারপতি দু’সপ্তাহের মধ্যেই তাঁদের বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে তদন্ত শুরু করতেও বলেছিলেন বিচারপতি। বুধবার এই মামলাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি।

অন্য বিষয়গুলি:

Justice Abhijit Gangopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy