(বাঁ দিকে) ঝাড়গ্রামে হাতি ধরার তোড়জোড়। —নিজস্ব চিত্র। কলকাতা হাই কোর্ট (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
জ্বলন্ত হুলা ছুড়ে মেরে ফেলা হয়েছে পূর্ণবয়স্ক অন্তঃসত্ত্বা একটি হাতিকে। ঝাড়গ্রামের ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। সেই মামলা গড়িয়েছে হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্ট এই সংক্রান্ত রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্যের কাছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে মামলাকারীর সন্দেহ, অন্য কেউ বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। মামলাকারীর বক্তব্য শোনার পর আদালত জানিয়েছে, নেতা-মন্ত্রীরা জড়িত থাকলেও তাঁদের নাম জমা দেওয়া হোক।
স্বাধীনতা দিবসের দিন ভোরে একটি হাতির দল ঝাড়গ্রাম শহরে ঢুকে পড়েছিল। তার মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা একটি হাতিকে জ্বলন্ত হুলা ছুড়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। হুলা তার শরীরে গেঁথে গিয়েছিল। পরে তার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় বনদফতরের গাফিলতির দিকে আঙুল তুলেছেন স্থানীয়েরা। দু’জনকে গ্রেফতার করা হলেও তদন্তপ্রক্রিয়ায় খুশি হতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মামলাকারী। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি ছিল। আদালত জানিয়েছে, তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে রিপোর্ট রাজ্যকে পরবর্তী শুনানির দিন জমা দিতে হবে।
তদন্তপ্রক্রিয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে মামলাকারী আদালতে জানান, যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁরা আসল দোষী নন। আরও কেউ কেউ এই নৃশংসতার নেপথ্যে থাকতে পারেন। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি। মামলাকারীর বক্তব্য শুনে আদালত তাঁর কাছ থেকে হলফনামা চেয়েছে। বিচারপতি বলেছেন, ‘‘এই ঘটনায় আর কে জড়িত থাকতে পারেন বলে মনে হচ্ছে? নেতা-মন্ত্রী যে-ই হোন, নাম আদালতে জমা দিন।’’ হলফনামা দিয়ে সন্দেহভাজনদের নাম আদালতে দিতে বলা হয়েছে মামলাকারীকে।
১৫ অগস্ট ঝাড়গ্রাম শহরে ঢুকে পড়া হাতির দলের একটি দাঁতাল হাতির আক্রমণে অনুপ মল্লিক (৫৪) নামের এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়। বাকি চারটি হাতি একটি ঝোপে ঢুকে পড়েছিল। তাদের দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেছিলেন এলাকায়। বিকেলের পর হুলা পার্টির লোকজন হুলা জ্বালিয়ে হাতি তাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন। সেই সময়েই একটি হাতির পিঠে জ্বলন্ত হুলা গেঁথে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। হাতির আর্ত চিৎকার এখনও ভুলতে পারেননি ঝাড়গ্রামবাসী। কেন হাতিটিকে মারা হল, হুলা কেন তাদের উদ্দেশ করে ছোড়া হল, প্রশ্ন উঠেছে। আগে কখনও ঝাড়গ্রামে এ ভাবে হাতি মারা হয়নি বলে জানান স্থানীয়েরা। হাতি হত্যার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শহরে। হুলাপার্টির লোকজনকে মারধরও করা হয় সে রাতেই। সেই ঘটনার রিপোর্ট চাইল আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy