বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।—ফাইল চিত্র।
প্রায় চার বছর আগে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে বিনামূল্যে রক্ত দিতে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেখানে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে পোস্টার দিয়ে জানানো হয়েছে, রক্ত পেতে হলে হয় ডোনার কার্ড লাগবে, নয় হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ‘প্রসেসিং চার্জ’ দিতে হবে।
হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক সুদীপ ধীবরের দাবি, নিয়ম মেনেই হাসপাতালে ভর্তি রোগী বা তাঁদের আত্মীয়দের কাছ থেকে রক্তের জন্য ‘ডোনার’ কার্ড চাওয়া হচ্ছে। কার্ড দিতে না পারলে নির্দিষ্ট হারে ‘প্রসেসিং চার্জ’ নেওয়া হচ্ছে। যদিও রাজ্যের যুগ্ম অধিকর্তা (ব্লাড সেফটি) স্বপন সরকার বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালের রোগীদের জন্য কোনও অবস্থাতেই সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক প্রসেসিং ফি নিতে বা ডোনার কার্ড চাইতে পারে না।’’
এসএসকেএমের অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর জন্য সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত নিতে এলে প্রসেসিং ফি লাগে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালের রোগীর জন্য পুরোটাই বিনামূল্যে।’’ সে কথা জানিয়ে সুদীপবাবুকে ফের প্রশ্ন করা হলে তাঁর দাবি, ‘‘যত দূর মনে পড়ে, সাত-আট মাস আগে নতুন নির্দেশিকায় প্রসেসিং ফি নিতে বলা হয়েছিল। তবে সে নির্দেশ হাতের কাছে নেই। কোথাও ভুল হয়েছে, তা-ও হতে পারে।’’
আরও পড়ুন: মৃত্যুফাঁদ মিথাইল অ্যালকোহলেই
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের বাইরে ঝুলছে এই পোস্টার।
বর্ধমান ব্লাড ব্যাঙ্কের বাইরে মাস চারেক আগে ঝোলানো ওই পোস্টার অনুযায়ী, হাসপাতালের সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীদের জন্য রক্ত নিতে গেলে ৫০ টাকা, ‘পেয়িং বেড’-এর জন্য ১০০ টাকা ও ‘কেবিন’-এর রোগীর জন্য ১৪০ টাকা ফি দিতে হবে। যদিও বর্ধমান মেডিক্যালের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা।
আরও পড়ুন: হনুমানও ‘দলিত’! ত্রেতা যুগের বার্থ সার্টিফিকেট কলিতে দিলেন যোগী
প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসাধীন কাটোয়ার এক বৃদ্ধার ছেলের দাবি, ‘‘রাতে ডাক্তার জানালেন, দু’ইউনিট বি পজিটিভ রক্ত লাগবে। হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক বলল, ডোনার কার্ড ছাড়া রক্ত দিতে গেলে টাকা লাগবে। বাধ্য হয়ে ওই রাতেই অনেক কষ্টে একটা কার্ডের ব্যবস্থা করলাম। আর এক ইউনিটের জন্য নিজে রক্ত দিলাম।’’ রক্ত-আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা মহম্মদ আসরাফুদ্দিনের দাবি, “কার্ড নিয়ে গেলেও অনেক সময় রোগীরা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত পান না। বাধ্য হয়ে বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত কিনতে হয়, এমনও শুনেছি।’’
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের অধিকর্তা মধুসূদন মণ্ডল জানান, ২০১৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন স্বাস্থ্যসচিব ওঙ্কার সিংহ মিনা একটি নির্দেশ জারি করে সরকারি হাসপাতালে রোগীদের জন্য বিনামূল্যে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত দিতে বলেছিলেন। তা এখনও বদলায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy