গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
২১ জুলাই। ফি বছর এই দিনটি ‘শহিদ দিবস’ হিসেবে পালন করে তৃণমূল। এ বার সেই দিনে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলও ‘শহীদ দিবস’ পালন করতে চায়। বিজেপি সূত্রে খবর, বুধবার কী ভাবে ওই কর্মসূচি হবে তা সোমবারই চূড়ান্ত করে ফেলেছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে তার ঘোষণা করা হতে পারে। রাজ্যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ ফলপ্রকাশের দিন থেকেই তুলে আসছে বিজেপি। দলের দাবি, পঞ্চায়েত ভোট থেকে হিসাব করলে তৃণমূল জমানায় এখনও পর্যন্ত ১৮০ জনের বেশি বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তৃণমূলের বরাবরের ‘শহিদ দিবস’ পালনের দিনেই মৃত কর্মীদের শহিদের মর্যাদা দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের কর্মসূচির মাধ্যমে পাল্টা দিতে চাইছে বিজেপি।
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই যুব কংগ্রেসের কর্মসূচিতে গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। সেই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগে যুব কংগ্রেসের কর্মসূচি হলেও তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই ওই দিনটি ‘শহিদ দিবস’ হিসাবে পালন শুরু করেন মমতা। বিরোধী নেত্রী থেকে মমতার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দীর্ঘ সময়ে অনেক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে কলকাতার সমাবেশ। প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পরে সেই সমাবেশ বড় আকারে হয়েছিল ব্রিগেড ময়দানে। কিন্তু তৃতীয় মমতা সরকার গঠনের পরে করোনার কারণে কোনও সভাই হচ্ছে না। ২০২০ সালের মতো বুধবারও ভার্চুয়াল বক্তব্য রাখবেন মমতা। তবে এ বার একটা বদল এসেছে। ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচিকে সর্বভারতীয় চেহারা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্যের শাসক দল।
ঠিক সেই দিনেই পাল্টা কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, বুধবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত হতে পারে কর্মসূচি। কোনও কেন্দ্রীয় নেতা বক্তব্য রাখবেন কি না তা জানা না গেলেও দিল্লি থেকে ভাষণ দেবেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্যের অন্য বিজেপি নেতারাও ভাষণ দেবেন।
বিজেপি সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে যে, খুব কম সময়ের প্রস্তুতি হলেও বুধবারের কর্মসূচিকে সফল করতে নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে জেলায় জেলায়। সব জেলা দফতরে বড় স্ক্রিন লাগিয়ে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে। একই ভাবে বুথ স্তর পর্যন্ত যাতে এই কর্মসূচিকে নিয়ে যাওয়া যায় তার পরিকল্পনাও করছে গেরুয়া শিবির। ভোটের পর থেকে বিপর্যস্ত বিজেপি এখনও পর্যন্ত কোনও কর্মসূচিই সফল করতে পারেনি। করোনা পরিস্থিতির বিধি নিষেধের কারণে সমাবেশও করতে পারেনি। কলকাতায় পুরসভা ঘেরাও-সহ কয়েকটি বিক্ষোভ কর্মসূচি নিলেও তা সে ভাব দাগ কাটতে পারেনি। এ বার তাই ২১ জুলাইকে কেন্দ্র করেই কর্মসূচির ডাক।
এই কর্মসূচি সফল করতে বিজেপি এতটাই মরিয়া যে, প্রতিটি লোকসভা এলাকায় আলাদা আলাদা সাংবাদিক বৈঠক করতে পারে মঙ্গলবার। কলকাতা ছাড়াও জেলা স্তরে কয়েকটি জায়গায় কোভিড বিধি মেনে জমায়েতের পরিকল্পনাও রয়েছে বলেই বিজেপি সূত্রে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy