বেআইনি নির্মাণ নিয়ে চাপে কলকাতা পুরসভা। —ফাইল ছবি।
ট্যাংরায় জোড়া বহুতল হেলে পড়ার পর অবশেষে টনক নড়ল কলকাতা পুরসভার। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত শুনানি অনন্তকাল চলতে পারে না। তাতে আইনি দীর্ঘসূত্রিতার সুযোগ নিয়ে অবৈধ নির্মাণ শহরে মাথাচাড়া দিতে পারে। তাই এ বার কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুর কমিশনার ধবল জৈনকে অবৈধ নির্মাণের শুনানি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশিকা (এসওপি) তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, কোনও বেআইনি নির্মাণের শুনানিতে আবেদনকারী এবং অভিযোগকারী উভয় পক্ষ যদি পর পর তিনটি শুনানিতে অংশ না নেয়, তা হলে সেই শুনানি বন্ধ করে রায় দিয়ে দিতে হবে। গত বছর মেয়র তথা পুরমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দর এলাকায় এক বেআইনি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় ১৩ জন মানুষ মারা যান। সেই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত তিন জন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করে মুখরক্ষার চেষ্টা হয়েছিল।
সেই ঘটনায় মেয়রের সঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রশাসনও প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। গত বছর ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে সেই সাসপেন্ড থাকা ইঞ্জিনিয়ারদের সাসপেনশন তুলে কাজে ফেরানো হয়েছে। আর তার পরেই বাঘাযতীন এবং ট্যাংরায় বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনায় ফের অস্বস্তিতে পড়েছে পুরসভা। বুধবার ট্যাংরায় বহুতল হেলে পড়ার ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত একটি মামলার প্রেক্ষিতে একাধিক নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায়ের নির্যাসকে হাতিয়ার করে পুরসভা অবৈধ নির্মাণ রুখতে আরও তৎপর হয়েছে। তবে কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, বেহালার ১৪ নম্বর বোরো থেকে নির্মাণ সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়েছে মেয়রের দফতরে। সেই অভিযোগে বলা হয়েছিল, বেআইনি নির্মাণের জন্য পুরসভা নোটিস দিয়েছিল। তার পর শুনানির জন্য ডাকাও হয়। কিন্তু অভিযুক্তরা তিন-তিন বার শুনানিতে আসেননি। ফলে বার বার শুনানি পিছিয়ে যাচ্ছে। সেই ফাঁকে অবৈধ নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছেন অভিযুক্ত।
এমন অভিযোগ পাওয়ার পরই মেয়র এ বিষয়ে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং কলকাতায় পরপর দু’টি বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনায় টনক নড়েছে কলকাতার পুর প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের। তবে পুরসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, কলকাতায় দু’টি বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনার অনেক আগেই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে শুনানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তাই দু’টি বিষয়কে এক করে রাখা উচিত নয়। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে শুনানির রায় চ্যালেঞ্জ করে যে কেউ হাইকোর্টে যেতে পারেন। কিন্তু তাতে পুরসভার বিরুদ্ধে অন্তত বেআইনি নির্মাণ নিয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠবে না। অবৈধ নির্মাণ নিয়ে শুনানি চলাকালীন অভিযুক্ত পক্ষ হাজির না-থাকার ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। কিন্তু বিবদমান দু’পক্ষ হাজির না হলে, বা কোনও এক পক্ষ নিয়মিত অনুপস্থিত থাকলে কী করা হবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও নির্দেশ এত দিন ছিল না। এই আবহে মেয়রের নির্দেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy