ত্বহা সিদ্দিকি। ফাইল ছবি
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে অন্তত পঁচাত্তর থেকে একশোটি আসনে হিন্দুত্ববাদী তকমা তাদের ধাক্কা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কারণ, ওই আসনগুলির ফলাফল নিয়ন্ত্রণ করেন বাংলাভাষী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে ক্ষোভের প্রতিফলন এই আসনগুলিতে কী ভাবে কম রাখা যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। দিল্লির রাজনৈতিক সূত্রের খবর, এই কৌশলের অঙ্গ হিসেবে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকিকে পাশে চাইছেন তাঁরা। ত্বহার সঙ্গে সম্প্রতি ফোনে কথা বলেছেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সূত্রের খবর, বিজেপির পক্ষ থেকে ত্বহাকে জানানো হয়, সামনে বড় লড়াই আসছে। ত্বহার জনপ্রিয়তার কথা তাঁরা অনেক শুনেছেন। তাঁর সহযোগিতা এবং শুভেচ্ছার প্রয়োজন রয়েছে বলেই বিজেপি মনে করে। দল চায়, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে ত্বহা দিল্লি আসুন।
দিল্লি যাওয়ার প্রস্তাবে অবশ্য ত্বহা রাজি হননি। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, যে কোনও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেই তিনি সরব। তা সে বিজেপি-ই হোক, বা কংগ্রেস বা তৃণমূলের কোনও বিশেষ অংশ। ত্বহার কথায় “বিজেপি একাই সাম্প্রদায়িক এমনটা তো নয়। কংগ্রেস, সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যেও সাম্প্রদায়িক অংশ রয়েছে। এই সাম্প্রদায়িক অংশের বিরুদ্ধে আমরা সরব হব।”
ভোট ঘনিয়ে আসা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির ত্বহাকে পাশে চাওয়ার বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্য রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিমবঙ্গের মোট ২৯৪টি আসনের মধ্যে ৬০ থেকে ৬৮টি সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করেন বঙ্গভাষী মুসলিম সম্প্রদায়। আরও গোটা তিরিশেক আসনে আংশিক ভাবে তাঁদের প্রভাব রয়েছে।
বিজেপি নেতাদের হিসেব, বামেদের দখলে থাকা বাংলার মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক যে ২০০৮ থেকে শুরু করে ২০১১ পর্যন্ত ক্রমশ তৃণমূলের দিকে গিয়েছে, তার পিছনে ত্বহা সিদ্দিকির বড় ভূমিকা ছিল। বিশুদ্ধ হিন্দুত্ববাদী দল হিসেবে পরিচিত বিজেপি যদি ফুরফুরা শরিফ তথা ত্বহা সিদ্দিকিকে সঙ্গে রাখার বার্তা দিতে পারে, তা হলে ভোটের বিচারে তাদের ক্ষতি কিছু কম হবে।
অন্য দিকে, বিধানসভা ভোটে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন আহলে সুন্নাতুল জামাতের কর্ণধার আব্বাস সিদ্দিকি। শনিবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের পোলেরহাটে এক জনসভায় সিদ্দিকি বলেন, ‘‘সারা রাজ্যে আমরা ৪৪টি আসনে প্রার্থী দেব। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৮টি ও উত্তর ২৪ পরগনায় ৯টি।’’ পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে। দাবি মেনে আসন সমঝোতা করা হলে শাসক দলের হয়ে অন্য আসনগুলিতে তাঁরা প্রচার করবেন। তৃণমূল আসন সমঝোতায় না-গেলে সমস্ত জায়গায় তাঁরা ‘ঘেঁটে দেবেন’ বলেও হুমকি দেন আব্বাস।
সম্প্রতি ভাঙড়ের কাঁচদিয়ায় সংগঠনের আক্রান্ত এক কর্মীকে দেখতে গিয়ে শাসক দলের হাতে আব্বাস আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। যার প্রতিবাদে তাঁর অনুগামীরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় পথ অবরোধ করেন। পাল্টা জনসভা করে আব্বাসকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তৃণমূল। বলা হয়েছিল, ক্ষমতা থাকলে ভোটে দাঁড়ান আব্বাস। এ দিন আব্বাস বলেন, ‘‘আমি জীবনতলায় জনসভা করব। দেখি আমাকে কে আটকায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy