শুভেন্দু অধিকারী।
গত বাজেট অধিবেশনে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ সাত জন বিজেপি বিধায়ক সাসপেন্ড হয়েছিলেন। আগামী ১০ জুন থেকে যে বাদল অধিবেশন শুরু হবে, সেখানে অংশ নিতে পারবেন না তাঁরা। তাই আসন্ন বাদল অধিবেশনে গোটা বিজেপি পরিষদীয় দল অধিবেশন বয়কট করতে পারে।
সূত্রের খবর, সম্মিলিত ভাবে বিজেপি বিধায়করা বিরোধী দলনেতাকে জানিয়ে দিয়েছেন যত দিন না ওই বিধায়কদের সাসপেনশন তোলা হচ্ছে, তত দিন তাঁরা বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে চান না। ১০-১৭ জুন চলবে বিধানসভার বাদল অধিবেশন। এই অধিবেশনেই গৃহীত হতে পারে বেশ কয়েকটি শিক্ষা বিল। সেই বিলগুলির মধ্যে রয়েছে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার বিলটিও। পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের বদলে শিক্ষামন্ত্রীকে ‘ভিজিটর’ নিয়োগের বিলটিও আনা হতে পারে এই অধিবেশনেই।
রাজ্য বিধানসভায় এমন সব গুরুত্বপূর্ণ বিল আনা হবে, অথচ সেখানে অংশ নেবেন না প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বিধায়করা— এই বিষয়টিও মাথায় রেখেছে বিজেপি পরিষদীয় দল। আবার নিজেদের বিধানসভার অধিবেশনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা। তাই বিকল্প একটি পথ ভেবে রেখেছেন তাঁরা। বিধানসভায় সংবিধান প্রণেতা বি আর অম্বেডকরের মূর্তির নীচে ‘মক অ্যাসেম্বলি সেশন’ বসিয়ে এইসব বিলগুলির বিরোধিতা করতে পারেন বিজেপি বিধায়করা। যাঁর নেতৃত্বে থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর থেকেই অম্বেদকর মূর্তির নীচেই বসে নিজের কাজকর্ম সারেন নন্দীগ্রাম বিধায়ক। এ বার সেই অম্বেডকরের মূর্তির নীচে বসে নিজের বিরোধী দলনেতার দায়িত্বও পালন করতে চান তিনি। এর ফলে একদিকে যেমন সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরোধিতা করা যাবে প্রকাশ্যেই। তেমনই আবার অধিবেশনে যোগ না দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলা যাবে। এমন ভাবনা থেকেই গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা বিধানসভা চত্বরে খোলা আকাশের নীচে অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশে ‘মক’ অধিবেশন বসাবেন বলেই সূত্রের খবর।
গত বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন শাসক ও বিরোধী দলের বিধায়করা। যার জেরে শুভেন্দু-সহ বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগগা, জয়পুরের বিধায়ক নরহরি মাহাতো, শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের মতো সদস্যদের সাসপেন্ড করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপালের বক্তৃতার সময় গোলমাল করার অভিযোগে আগেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী ও পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়কে। পরে জানানো হয়েছিল অনির্দিষ্টকালের জন্য এই বিধায়কদের সাসপেন্ড করা হল। স্পিকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে বিজেপি পরিষদীয় দল। সেই মামলার শুনানি এখনও হয়নি, স্পিকারও গেরুয়া শিবিরের বিধায়কদের সাসপেনশন প্রত্যাহার করেননি। তাই বাকি বিজেপি বিধায়করা অধিবেশনে যোগ না দিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে অধিবেশনের বাইরে বসে প্রতিবাদ করতে চান। এক বিজেপি বিধায়কের কথায়, ‘‘আমাদের দলনেতা ও মুখ্য সচেতককে একতরফা ভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। হাতাহাতির ঘটনায় যেমন বিজেপি বিধায়করা অভিযুক্ত ছিলেন। তেমনই শাসক দলের একঝাঁক বিধায়কের বিরুদ্ধে মারামারির প্রমাণ ছিল। কিন্তু শাসকদলের বিধায়কদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা অধিবেশন কক্ষের বাইর বিরোধী দলনেতার সঙ্গে বসেই প্রতিবাদে সামিল হব।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy