ফিরহাদ হাকিম। — ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভার বুলডোজ়ার রাজনীতি নিয়ে শেষ পর্যন্ত মুখ খুললেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। জবাব দিলেন যাবতীয় প্রশ্নের। কলকাতায় পুরসভাও কি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মতো 'বুলডোজ়ার রাজনীতি' শুরু করেছে? শনিবার শ্যামপুকুর বিধানসভা এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি নেতা সুনীল সিংহের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। বিষয়টি নিয়ে এ বার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় মেয়রকে।
শনিবার পুর অধিবেশনে বিষয়টি উত্থাপন করেন ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। চেয়ারপার্সন মালা রায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘‘২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিনা নোটিশে একটি বাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙে দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হোক সদনে।’’ কিন্তু বিষয়টি পুর অধিবেশনের বিষয় নয় বলেই আলোচনার প্রসঙ্গ থেকে তা বাদ দিয়ে দেন মালা। কিন্তু বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হোক বলেও মন্তব্য করেন সজল। জবাবে বিষয়টি নিয়ে মেয়রের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব দেন চেয়ারপার্সন। মেয়র ফিরহাদও বিজেপি কাউন্সিলরকে তাঁর ঘরে আসতে বলেন। এর পর বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষকে নিয়ে কাউন্সিলর ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠককে কেন্দ্র করে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল ও বিজেপির কাউন্সিলররা। তার পর দু’পক্ষই মেয়রের কাছে অভিযোগ জানান।
পরে সাংবাদিক বৈঠক করে বুলডোজ়ার দিয়ে বাড়ি ভাঙা নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার ১৬ স্কোয়ার ফুটের জায়গা ওই বাড়িটি দখল করেছিল। এটা বোরোয় রেজোলিউশন করে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার বিষয়। সে ভাবেই ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের বুস্টারিং পাম্পের দেওয়ালের গায়ে কয়েকটি দোকান তৈরি হয়ে গিয়েছিল। যদি ওই বুস্টারিং পাম্পটিতে কোনও গোলমাল দেখা দেয়, তা হলে তো আমরা আর দেওয়াল সরিয়ে কাজই করতে পারব না। সেটা আমরা ভেঙে দিতে বলেছিলাম। ওখানেও ফুটপাথ দখল হচ্ছিল, তাই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ক্ষেত্রেও তেমনই ১৬ স্কোয়ার ফুট ফুটপাথ দখল করা হয়েছিল, কর্পোরেশন সেই দখলদারি সরিয়ে দিয়েছে। হয়তো নোটিশ দিয়ে কাজটি করা যেত।’’
কলকাতা পুরসভার জায়গা যে কোনও ভাবেই দখল করা যাবে না, তা নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে মেয়র বলেছেন, ‘‘যে জায়গাটি খালি করা হয়েছে, তা দখল করা হয়েছিল। অভিযোগকারীর বাড়ি কোনও ভাবেই ভাঙা হয়নি। দোকানের যে অংশটি বাইরে বার করে এনে ফুটপাথ দখল করা হয়েছিল, সেই অংশটিই শুধুমাত্র ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাড়িটি ৭০ বছরের পুরনো। তবে দোকান দিয়ে ফুটপাথ দখল করা হয়েছিল। বাড়িটি নিয়ে বা কর সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই অংশ ছেনি হাতুড়ি দিয়ে ভাঙা হবে, নাকি বুলডোজ়ার দিয়ে ভাঙা হবে, তা জানি না। তবে আমার কাউন্সিলর এই ধরনের কাজ করছিলেন, তা আমরা বুলডোজ়ার দিয়েই ভেঙে দিয়েছি।’’ এই বিষয় নিয়ে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন মেয়র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy