গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল এবং সহগল হোসেনকে গ্রেফতার করে ইডি। —ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলার শুনানিতে সিবিআই বিশেষ আদালতে বিচারকের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল ইডি। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী সহগল হোসেন যে মামলায় গ্রেফতার, ওই মামলা আসানসোল থেকে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে স্থানান্তরের আবেদন করেন ইডির আইনজীবী। তাতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। এমনকি, বিচারক এই প্রশ্নও করেন যে, কোন অধিকারে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত করছে ইডি।
শনিবার আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে ইডির করা আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি চলছিল। গত ২৮ জুলাই গরু পাচার মামলা আসানসোল আদালত থেকে দিল্লির রাউস অ্যভিনিউ কোর্টে নিয়ে যেতে চেয়ে আবেদন করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। শনিবার ওই মামলার শুনানিতে বিচারকের প্রশ্নে বিড়ম্বনায় পড়েন ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র। শুনানিতে অনুব্রতের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ। সহগলের আইনজীবী ছিলেন শেখর কুন্ডু। সিবিআইয়ের তরফে হাজির ছিলেন তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী রাকেশ কুমার। শুনানির শুরুতেই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী ইডির আইনজীবীর কাছে জানতে চান, এখনও পর্যন্ত গরু পাচার মামলায় ঠিক কতগুলি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। এর জবাবে সিবিআইয়ের তদন্তকারি অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য জানান, একটি চার্জশিট এবং চারটি সাপ্লিমেন্টরি (অতিরিক্ত) চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। বিচারক প্রশ্ন করেন, ‘‘কত জন সাক্ষী রয়েছেন এই মামলায়?’’ সুশান্ত জবাব দেন প্রায় পাঁচশো।
এর পরেই বিচারক ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্রকে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, ‘‘এই মামলাটি আপনারা তদন্ত করছেন কোন অধিকারে? কেন্দ্রীয় সরকার কি আপনাদের কোনও ক্ষমতা দিয়েছে? যদি দিয়ে থাকে, তা হলে কাগজ দেখান।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আপনারা কেন, এনআইএ বা অন্য কোনও সংস্থা দিয়ে কেন এই মামলার তদন্ত হবে না, ব্যাখ্যা করুন। এই মামলার অধিকাংশটাই এখানকার সিবিআই আদালতে শুনানি হচ্ছে। তা হলে কী ভাবে আপনারা নিজেদের ইচ্ছে মতো অন্য কোনও আদালতে এই মামলা নিয়ে যেতে চাইছেন? তা-ও আবার পাঁচশো সাক্ষীকে সঙ্গে করে!’’ বিচারকের পর্যবেক্ষণ, এতে বিচার হবে না, দ্রুত ট্রায়ালও সম্ভব হবে না। আদালতের ফের প্রশ্ন, ‘‘ইডি কি এ ভাবে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে অন্য এজেন্সির মামলাকে অন্য কোনও আদালতে স্থানান্তরের জন্য আবেদন করতে পারে?’’
বিচারকের এই প্রশ্নবাণের কাছে ‘আত্মসমর্পণ’ করেন ইডির আইনজীবী। তিনি বিচারকের কাছে উপযুক্ত তথ্য নিয়ে আসার জন্য সময় চেয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ২ সেপ্টেম্বর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy