Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
BJP

BJP: বিজেপি স্পষ্ট দু'ভাগ, শান্তনুর সঙ্গে বিদ্রোহী বৈঠক‌ শেষে সংগঠনে আমূল বদলের দাবি

শনিবার বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠকের পরে বিদ্রোহীরা সোজাসুজি দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর অপসারণের দাবি তুললেন।

বিধানসভা নির্বাচনের ফলে হতদ্যম রাজ্য বিজেপি-র অস্বস্তি কিছুতেই কাটছে না।

বিধানসভা নির্বাচনের ফলে হতদ্যম রাজ্য বিজেপি-র অস্বস্তি কিছুতেই কাটছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২২ ১৯:০১
Share: Save:

বিধানসভা নির্বাচনের ফলে হতদ্যম রাজ্য বিজেপি-র অস্বস্তি কিছুতেই কাটছে না। ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে দলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। এ বার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আরও সংগঠিত বিদ্রোহীরা। শনিবার বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠকের পরে বিদ্রোহীরা সোজাসুজি দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর অপসারণের দাবি তুললেন। একা অমিতাভ ন‌ন, তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধেও ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।

বৈঠক শেষে শান্তনু নাম না বললেও স্পষ্টই বুঝিয়ে দিয়েছেন সংগঠনের অন্যতম শীর্ষ নেতা অমিতাভর বিরুদ্ধেই যত রাগ। সেই ক্ষোভে সামিল বর্তমান রাজ্য কমিটির সদস্য তথা রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, "দলের ভোট যাংরা ৪ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছেন তাঁদেরকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা হচ্ছে। তাই বর্তমান রাজ্য কমিটি ভেঙে নতুন করে তৈরি করা দরকার।"

প্রসঙ্গত আগে রাজ্যের সহ-সভাপতি পদে থাকা জয়প্রকাশকে সম্প্রতি সরিয়ে দিয়ে শুধুই মুখপাত্র করা হয়েছে। নতুন কমিটি থেকে বাদ যাওয়া প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুও শনিবারের বৈঠকে হাজির ছিলেন। বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু এখন কেন্দ্রীয় সরকারের বন্দর, জাহাজ ও জলপথ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী। সেই মন্ত্রকের অধীনে থাকা কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের গেস্ট হাউজেই দলের বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বৈঠকে বসেন শান্তনু। সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন সদ্য ঘোষিত রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়া রীতেশ তিওয়ারি, তুষার মুখোপাধ্যায়, দেবাশিস মিত্র সহ অনেকেই। এ ছাড়াও রাজ্যের দুই বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর এবং অশোক কীর্তনীয়া যোগ দেন বিক্ষুব্ধদের বৈঠকে।

রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কমিটি ঘোষণার পরে থেকেই দলে কোন্দল শুরু হয়ে যায়। বিজেপি-র মতো 'শৃঙ্খলাবদ্ধ' দলে এটা বেনজির বলেই মনে করেন গেরুয়া শিবিরের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, দলে রদবদ‌ল অতীতেও হয়েছে কিন্তু এই ভাবে রাজ্য স্তরের নেতার প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখাননি। প্রথমেই দলের একাধিক হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেড়িয়ে যান সায়ন্তন। এর পর তা যেন সংক্রমণের চেহারা নেয়।

নতুন জেলা সভাপতিদের নামের তালিকা ঘোষণার পরে পরেই ক্ষোভে বিভিন্ন হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছাড়েন পাঁচ মতুয়া বিধায়ক। সেই ধাক্কার মধ্যেই বিদ্রোহে যোগ দেন বাঁকুড়ার বিধায়করা। এর পরে শান্তনু, খড়্গপুর সদরের বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায়, যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডারা। প্রকাশ্যে ক্ষোভের কথা বলেন প্রাক্তন সহ-সভাপতি রাজকমল পাঠক। তবে শনিবার হওয়া বিক্ষুব্ধদের বৈঠকে শঙ্কুদেব ও রাজকমল উপস্থিত ছিলেন না।

মতুয়াদের দেওয়া ভোটের আগের প্রতিশ্রুতি বিজেপি রাখছে না অভিযোগে অনেক আগে থেকেই ক্ষুব্ধ শান্তনু। তিনি বিজেপি ছেড়ে দেবেন কি না তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়। দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক গ্রুপ ছাড়ার পর শান্তনু ঠাকুর বলেন, “বঙ্গ বিজেপি-র বর্তমান নেতৃত্বের শান্তনু ঠাকুর বা মতুয়া সমাজের ভোট নিষ্প্রয়োজন। তাই আমারও ওই সব গ্রুপে থাকার দরকার নেই। সময়মতো সব জবাব দেব।” এর পরে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকও করেন শান্তনু। তাতে অস্বস্তি বাড়ে বঙ্গ বিজেপি-র। সে অস্বস্তি নতুন করে বাড়ল শনিবার। তবে এটাকে অস্বস্তি মানতে রাজি নন সুকান্ত। তিনি বলেন, "এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আলোচনা করে সব মিটে যাবে।"

বিজেপি-র সংবিধান অনুযায়ী রাজ্য সংগঠনে সভাপতির পরে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখন সেই পদ নিয়েই যত গোলমাল। এর আগে এই পদে থাকা সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে দলে বিরোধিতার সুর তৈরি হয়। বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগে সুব্রতকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় অমিতাভকে। এখন তাঁকে নিয়েও ক্ষোভ চরমে। বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য, অমিতাভর পছন্দের লোকদের নিয়েই কমিটি গড়েছেন সুকান্ত।

সেখানে ‌এমন অনেককে রাখা হয়েছে যাঁদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাই নেই। এই ভাবে বিজেপি-কে দুর্বল করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও দাবি তাঁদের। অমিতাভর বিরুদ্ধে রাগ এতটাই যে দলের প্রতীক পদ্মের ছবি-সহ অমিতাভর অপসারণ চেয়ে পোস্টার পড়েছে ট্রেনের গায়ে। এটা ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদেরই কাজ বলে অনেকের দাবি। যদিও দলের প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "এই পোস্টারের সঙ্গে বিজেপি-র কোনও যোগ নেই। দলের কোনও কর্মী এমনটা করতেই পারেন না।"

অন্য বিষয়গুলি:

BJP BJP Leaders Santanu Thakur Joy Prakash Majumder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy