তবে কি বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের অনুগামীদের সম্পর্কেই অভিযোগ তুলতে চাইছেন হিরণ? এমন প্রশ্ন শুনে হিরণ বলেন, ‘‘আমি কারও নাম বলতে চাই না। যা বলার সাংবাদিক বৈঠকে বলব। আমার কাছে সব প্রমাণ রয়েছে।’’
ফের অভিমানী হিরণ। —ফাইল চিত্র
পুরভোটে জয়ী দলের ৬৩ জন কাউন্সিলরকে শনিবার সংবর্ধনা দেবে রাজ্য বিজেপি। দলের বিশেষ বৈঠকের আগে জাতীয় গ্রন্থাগারের সভাকক্ষে হাজির থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সকলকে। কিন্তু সেখানে থাকছেন না দলের বিধায়ক ও কাউন্সিলর হিরণ চট্টোপাধ্যায়। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে সে কথা জানিয়েও দিয়েছেন তিনি। সুকান্তের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানানোর পাশাপাশি হিরণের তোপ, ‘‘এই নির্বাচনে আমাকে হারানোর জন্য কারা কারা ষড়যন্ত্র করেছেন তার সব প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেই সব প্রমাণ সামনে নিয়ে আসব। সাংবাদিক বৈঠক করে জানাব কে কী ভাবে আমাকে হারানোর চেষ্টা করেছেন।’’
পুরভোটে বিজেপি-র ছয় বিধায়ক প্রার্থী হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন জয় পান। কাঁথির ১০ নম্বর ওয়ার্ডে অরূপ দাস এবং হিরণ জয়ী হয়েছেন খড়্গপুর পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। এটা ঠিক যে, হিরণের লড়াই সহজ ছিল না। গত বিধানসভা নির্বাচনে ওই ওয়ার্ডে হিরণ পিছিয়ে ছিলেন ২৬৫ ভোটে। বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন তৃণমূলের পরিচিত নেতা জহর পাল। তা সত্বেও হিরণ জয় পান। পুরভোটে প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই ঘনিষ্ঠ মহলে হিরণ বলতে শুরু করেন, তাঁকে হারানোর জন্য দলেরই একাংশ ষড়যন্ত্র করছে। যদিও প্রকাশ্যে কারও নামোচ্চারণ করেননি তিনি। এ বার সেই সব নাম প্রকাশ্যে এনে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপি-র অভিনেতা বিধায়ক। এ কথা কি দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন? জবাবে হিরণ বলেন, ‘‘যেখানে এবং যাঁকে বলা দরকার সব জানানো রয়েছে। এর বেশি কিছু বলব না।’’ তবে শনিবার সংবর্ধনা নিতে যে আসবেন না, সে কথা তিনি সুকান্তকে জানিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। সেই সঙ্গে বলেন, ‘‘আমি এখন ময়দান ছেড়ে যেতে পারব না। আমার কর্মীরা মার খাচ্ছে। খড়্গপুর সদরে শাসকদলের সন্ত্রাস চলছে। এ সব ছেড়ে, কর্মীদের বিপদের মধ্যে রেখে আমি কলকাতায় প্রাইজ নিতে যেতে পারব না। আমি স্পষ্ট করেই নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছি।’’
তবে কি বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের অনুগামীদের সম্পর্কেই অভিযোগ তুলতে চাইছেন হিরণ? এমন প্রশ্ন শুনে হিরণ বলেন, ‘‘আমি কারও নাম বলতে চাই না। যা বলার সাংবাদিক বৈঠকে বলব। আমার কাছে সব প্রমাণ রয়েছে।’’ দিলীপ ও হিরণের সম্পর্ক যে আদায়-কাঁচকলায় তা রাজ্য বিজেপি-র সীমা ছাড়িয়ে রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের জানা। অনেক দিন আগেই দিলীপের সঙ্গে মুখ দেখাদেখি বন্ধ করা হিরণের সঙ্ঘাত বার বার সামনে এসেছে। হিরণের বিধানসভা এলাকা দিলীপের লোকসভা মেদিনীপুরেরই অঙ্গ। সেই সূত্রে গত জানুয়ারি মাসে খড়্গপুরে পুরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি বৈঠক করেন দিলীপ। তাতে যোগ দেননি হিরণ। পরে কয়েকটি দলীয় হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান।
এর পরে বৃহস্পতিবার একটি ঘটনায় ফের সামনে আসে খড়্গপুরে হিরণ ও দিলীপ গোষ্ঠীর গোলমাল। হিরণ ও তাঁর অনুগামী কয়েক জন মহিলাকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দুই বিজেপি নেতা চঞ্চল কর ও গণেশ দে-র বিরুদ্ধে। তাঁরাও মার খেয়েছেন বলে পাল্টা অভিযোগ ওই দুই নেতার। এলাকায় দিলীপ ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত চঞ্চল ও গণেশ।
বিধায়ক পুরভোটে জেতায় তাঁকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের পার্টি অফিসে তাঁকে সংবর্ধনা দেন দলের কয়েক জন মহিলাকর্মী। ওই সময় চঞ্চল আর গণেশ পার্টি অফিসে ঢুকে সবাইকে বেরিয়ে যেতে বলেন বলে অভিযোগ। হিরণকে ধাক্কা এবং মহিলা অনুগামীদেরও গায়ে হাত দেওয়া হয় বলেও দাবি। এই বিতর্কের মধ্যেই হিরণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য কমিটির ডাকা সংবর্ধনা সভায় হাজিরই থাকবেন না তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy