Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
BJP

শোকজ়ের জবাবে রাজ্যের নেতাদের বিরুদ্ধেই পাল্টা শৃঙ্খলাভঙ্গের তোপ! পদ্মে বহাল ‘ডায়মন্ড’ অস্বস্তি

ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির পরাজিত প্রার্থী অভিজিৎ দাসকে শোকজ় করার পরে কি উল্টো বিপাকে পদ্মের রাজ্য নেতৃত্ব! কারণ, অভিজিৎ নেতাদের বিরুদ্ধেই শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন জবাবি চিঠিতে।

BJP leader Abhijit Das accused state party leadership in his reply to show cause letter

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ১৯:২৫
Share: Save:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে পরাজিত বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস (ববি)-কে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে শোকজ় করেছিল বিজেপি। জবাবি চিঠিতে অভিজিৎ রাজ্য দলের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন!

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাঠানো প্রতিনিধিদলকে বিক্ষোভ দেখানোয় ‘ইন্ধন’ দেওয়ার অভিযোগে গত ১৮ জুন অভিজিৎকে শোকজ়ের চিঠি পাঠিয়ে সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলে বিজেপি। মঙ্গলবার সেই চিঠির জবাব দিয়েছেন অভিজিৎ। নিজে ডাক মারফত চিঠি পেলেও জবাবি চিঠিটি সল্টলেকের দফতরে গিয়ে জমা দেন তিনি। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মপক্ষ সমর্থনের পাশাপাশি অভিজিৎ নতুন অভিযোগ তুলেছেন রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। বিজেপির সাংগঠনিক সংবিধানের কয়েকটি ধারার উল্লেখ করে দাবি করেছেন, তাঁকে শোকজ় করার পদ্ধতিটিই শৃঙ্খলাভঙ্গের শামিল। রাজ্যনেতাদের এমন চিঠি দেওয়ার এক্তিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিজিৎ।

নির্বাচন পর্ব থেকেই ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি প্রার্থী বলছিলেন, ওই সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অভিজিৎ সর্দার তাঁর সঙ্গে ‘অসহযোগিতা’ করছেন। তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ জেলা নেতারা দলের এক শ্রেণির সঙ্গে তৃণমূলের ‘যোগাযোগ’ রাখারও অভিযোগ করেছিলেন। এ নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে একাধিক বার অভিযোগ জানানো হলেও কর্ণপাত করা হয়নি বলেও দাবি করা হয়েছিল। ভোটে অভিজিৎ হারার পর নতুন বিতর্ক তৈরি হয়। ওই এলাকায় ‘সন্ত্রাস’ চললেও প্রার্থীর দাবিমতো কর্মীদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।

এর মধ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় সত্যানুসন্ধানী দল যায় ডায়মন্ড হারবারে। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখানো হয় স্থানীয় বিজেপির তরফে। অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করলেও অভিজিতের বাড়িতে আশ্রিত ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করতে যাননি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। তা নিয়েই বিক্ষোভ। কিন্তু তার পরেও কেন্দ্রীয় দলকে তাঁদের আশ্রয়স্থলে নিয়ে যেতে পারেননি ঘরছাড়ারা। এর পর স্থানীয় বিজেপি অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন বিক্ষোভকারী ঘরছাড়াদের একাংশ। ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে চলে আসায় অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য বিজেপি। তার পরেই তড়িঘড়ি অভিজিৎকে শোকজ়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাত দিনের মধ্যে জবাব দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

অভিজিৎ পাওয়ার আগেই সেই চিঠি ঘুরতে থাকে সংবাদমাধ্যমে। তা নিয়েই পাল্টা শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন অভিজিৎ। উল্লেখ করেছেন বিজেপির সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারার কথা। যেখানে দলের কোনও মতপার্থক্য ছাপার অক্ষরে প্রকাশ করা বা সংবাদপত্র বা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে প্রচার করা ‘শৃঙ্খলাভঙ্গ’ হিসাবে উল্লেখ করা রয়েছে। চিঠিতে অভিজিৎ প্রশ্ন তুলেছেন, তিনি পাওয়ার আগে কে বা কারা দলের গোপন চিঠি সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলেন? দলীয় সংবিধানের ওই অংশে বলা রয়েছে, কোনও নির্বাচনে যেখানে পার্টির প্রতীকে প্রার্থী থাকবেন, তাঁর বিরোধিতা করাও শৃঙ্খলাভঙ্গ। এ কথা উল্লেখ করে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে কেন রাজ্য নেতৃত্ব পদক্ষেপ করেননি, সে প্রশ্নও তুলেছেন অভিজিৎ।

পাশাপাশিই প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়ার এক্তিয়ার রাজ্য দলের রয়েছে কি না। দাবি করেছেন, এর ফলে দলীয় সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদের ‘বি’ ধারা লঙ্ঘিত রয়েছে। পদ্মের সংবিধানের ওই অংশে বলা রয়েছে, দলের জাতীয় পরিষদের (ন্যাশনাল কাউন্সিল) কোনও সদস্যকে রাজ্যের তরফে শোকজ় করা যায় না। কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপও করা যায় না। অভিজিৎ বিজেপির জাতীয় পরিষদের সদস্য। যদিও অভিজিৎকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি সাত দিনের জন্য সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয়। অভিজিতের জবাবি চিঠি প্রসঙ্গে রাজ্যনেতারা অবশ্য প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। অভিজিৎ শুধু বলেন, ‘‘দলকে যে চিঠি দিয়েছি, তা গোপনেই থাকুক। একই ভুল আমি করতে পারি না। তবে আমি যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলকে বিক্ষোভ দেখানোর সঙ্গে আদৌ যুক্ত নই, সেটা আগেই দলকে জানিয়েছিলাম।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy