Advertisement
২৯ জুন ২০২৪
Panchayat pradhan

‘প্রধান পাত্তা দেন না, খালি দই-আইসক্রিম খান বসে বসে’! হুগলির পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ তৃণমূল সদস্যদের

তৃণমূল সদস্য এবং দলীয় কর্মীরা পঞ্চায়েত অফিসে জড়ো হয়েছিলেন। শুরু হয় হট্টগোল। পঞ্চায়েতের ভিতরে ‘জয় বাংলা’ আওয়াজ ওঠে। পরিস্থিতি এমন হয় যে, প্রধান পঞ্চায়েত থেকে বেরিয়ে চলে যান।

Panchayat Pradhan

তৃণমূলের সেই পঞ্চায়েত প্রধান। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
পোলবা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ১৮:৫৮
Share: Save:

প্রধান একা সব সিদ্ধান্ত নেন। পঞ্চায়েত সদস্যদের পাত্তা দেন না। পঞ্চায়েত অফিসে শুধু দই-আইসক্রিম খান। দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যদের। অন্য দিকে, প্রধানের দাবি, মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁকে যে কেন দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যেরা ‘সহ্য’ করতে পারেন না, তার কারণ জানেন না। হুগলির পোলবার রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।

তৃণমূল সদস্যদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতে ২৩টি সংসদ। অথচ পঞ্চায়েত প্রধান প্রিয়ঙ্কা শূর তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জন ছাড়া আর কোনও সদস্যের সঙ্গে কথাবার্তা, আলোচনা করেন না। যে উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়েছে, সেখান থেকে অনেক সদস্যের এলাকাই বঞ্চিত। উন্নয়ন থমকে আছে। তাঁদের দাবি, ‘‘প্রধান অন্যের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছেন। দলের লোকের কথা শুনছেন না।’’

বুধবার ওই সব বিষয়ে ফয়সালার জন্য তৃণমূল সদস্য এবং দলীয় কর্মীরা পঞ্চায়েত অফিসে জড়ো হয়েছিলেন। শুরু হয় হট্টগোল। পঞ্চায়েতের ভিতরে ‘জয় বাংলা’ আওয়াজ ওঠে। পরিস্থিতি এমন হয় যে, প্রধান রেগেমেগে পঞ্চায়েত থেকে বেরিয়ে চলে যান।

তৃণমূলের রাজহাট অঞ্চল সভাপতি রূপকুমার করের অভিযোগ, ‘‘প্রধান নিজের মর্জিমাফিক কাজ করছেন। আমাদের কথা শোনেন না। প্রধান কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা করেন না। যা মনে হয় তাই করেন।’’ আর এক সদস্য সন্দীপ মালাকার একটি ছবি দেখিয়ে অভিযোগ করেন, ‘‘স্বামীর সঙ্গে বাড়িতে রাগ-অভিমান হলে সেটা পঞ্চায়েতে এসে মেটান প্রধান। কখনও দই খাইয়ে, কখনও আইসক্রিম খাইয়ে তাঁর রাগ ভাঙানো হয়। পঞ্চায়েতটা কাজের জায়গা। সেটাকে রোম্যান্সের জায়গা বানিয়ে ফেলেছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আগে আমরা অনেক প্রধান দেখেছি। কিন্তু, এ রকম দেখিনি। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ওঁর বুথে এ বার লোকসভা ভোটে আমরা হেরেছি। আমরা চাই, প্রধান পদত্যাগ করুন।’’

অন্য দিকে, প্রধান বলছেন, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে। প্রিয়াঙ্কার কথায়, ‘‘মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন ওঁরা। যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁরা এসে আমার সঙ্গে কথা বলুন। ওঁরা আমার সামনে এসে বলুন যে আমি সহযোগিতা করি কি না। আমি ১০ মাস হল পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছি। জানি না, আমি কী দোষ করেছি। ওঁরা বলছেন আমি বিজেপির দিকে ঝুঁকে রয়েছি। তা হলে ভোটে আমার পঞ্চায়েত থেকে হাজার ভোটের লিড এল কোথা থেকে? ওঁরা চাইছেন, আমাকে সরিয়ে দিতে। কিন্তু কারণ কী, সেটা জানি না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি প্রধান হওয়ার পর এক দিন উপপ্রধান বলল, ‘চলো, দই খাই।’ তখন আমার স্বামী খাইয়ে দিচ্ছিলেন আমায়। সেই ছবি তুলে রেখেছিলেন ওঁরা! আমরা স্বামী-স্ত্রী। বুঝুন ওদের মনোভাব কেমন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat pradhan Hooghly TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE