শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
ভাইফোঁটা মিটতেই ২৯ নভেম্বরের সভা সফল করতে কোমর বেঁধে নামতে চাইছে বিজেপি। এখনও ছট এবং জগদ্ধাত্রী পুজো বাকি থাকলেও সর্বত্র দলীয় নেতা-কর্মীদের রাস্তায় নামার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। দলের সব শাখা সংগঠন এবং সেলের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক সেরেছেন নেতারা। বৈঠক হয়েছে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গেও। সেই সব বৈঠকে কী ভাবে সাংগঠনিক কাঠামো ব্যবহার করে সব জেলা থেকে সমর্থকদের কলকাতায় আনতে হবে, তার বিস্তারিত নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য নেতারা। তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের তালিকা তৈরি করে আগে থাকতেই রাজ্যকে জানাতে হবে। এর পরে ওই সব পরিবারের সদস্যদের যত বেশি সম্ভব সমাবেশে নিয়ে আসতে হবে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাবদ রাজ্যের পাওনা টাকা দিল্লি দিচ্ছে না— এই অভিযোগ তুলে তৃণমূলের আন্দোলনের প্রেক্ষিতেই বিজেপির এই সমাবেশ। প্রথমে দিল্লিতে এবং পরে কলকাতায় রাজভবনের সামনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিক্ষোভ কর্মসূচি চলার সময়েই গত ৭ অক্টোবর এই কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি অনেক আগে থেকেই অভিযোগ তুলেছে যে, রাজ্যের বহু পরিবার কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হয়েছে রাজ্য সরকারের জন্য। তারই প্রেক্ষিতে শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, ২৯ নভেম্বর কলকাতায় বঞ্চিতদের সমাবেশ করা হবে। এক লক্ষ বঞ্চিতকে আনার লক্ষ্যও জানিয়ে দেন তিনি।
এখন সেই লক্ষ্যপূরণের জন্য বিজেপির সব সাংগঠনিক জেলাকে তৎপর হতে বলা হয়েছে। রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক জেলা ৪৩টি। তার প্রতিটি থেকে কত জন বঞ্চিত আনা যায়, তার তালিকা বানিয়ে ফেলতে হবে। তার জন্য সময় থাকতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কোন পরিবার কোন প্রকল্পের সুবিধা পাননি তার তালিকাও তৈরি করতে হবে। এর পরে নিশ্চিত করতে হবে ওই পরিবারের একাধিক সদস্য যাতে কলকাতার সমাবেশে আসেন। এর জন্য জেলা নেতৃত্বের পাশাপাশি সক্রিয় হতে বলা হয়েছে সব সাংসদ ও বিধায়ককে। নিজেদের এলাকায় আগে থেকেই বঞ্চিতদের নিয়ে বৈঠক, ছোট সভা করার কথাও বলা হয়েছে।
রাজ্য বিজেপির কর্মসূচি হলেও ঘোষণা করেছিলেন শুভেন্দু। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জনের পাশে বসে সেই ঘোষণার সময়ে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অনুমতি চেয়েছিলেন শুভেন্দু। পরে দলের তরফে সমাবেশের ঘোষণা করা হয়। তবে শুভেন্দু যে এটা নিজের সমাবেশ হিসাবেই দেখছেন এবং এক লাখ মানুষের জমায়েত করাকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছেন, তা-ও বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে স্পষ্ট হয়েছে। বিজেপির যে রীতি এবং ধারা, তাতে পরিষদীয় নেতা হিসাবে শুভেন্দুর সাংগঠনিক বিষয় দেখার কথা নয়। কিন্তু এই সমাবেশের সব প্রস্তুতি বৈঠকেই তিনি উপস্থিত থেকে বিভিন্ন নির্দেশ দিয়েছেন। অতীতে যেটা কখনওই দেখা যায়নি বলে জানাচ্ছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারাই। সেখানে নাকি শুভেন্দু বার বার বলেছেন, বেশি করে বঞ্চিতদের খুঁজে বার করে কলকাতায় নিয়ে আসতে হবে। তার জন্য কী কী করতে হবে, সেই সব সাংগঠনিক খুঁটিনাটিও বলেছেন তিনি। এটাকেই নতুন বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতাদের একাংশ। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘শুভেন্দুদা এই সভা সফল করা নিয়ে খুব উদ্যমী। দলের চেয়েও যেন বেশি করে ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখছেন।’’
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিজেপি এই সমাবেশে ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে করতে চায়। ঠিক যেখানে ফি বছর ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ হয় তৃণমূলের। সেই মর্মে বিজেপি আবেদনও জানিয়েছে কলকাতা পুলিশের কাছে। এখনও অনুমোদন মেলেনি। তবে সেটা না মিললে যে তাঁরা আদালতে যাবেন তা আগেই জানিয়ে রেখেছেন সুকান্ত, শুভেন্দুরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy