—নিজস্ব চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার আনোয়ার হোসেন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ সূত্রে খবর, শাসকদলের নেতা খুন হওয়ার পরেই পরিবারের তরফে পুলিশে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, তাতে নাম ছিল আনোয়ারের। এর পরেই আমডাঙার খুড়িগাছি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। প্রশ্ন উঠছে, কামদেবপুর হাটের দখল নিয়ে গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই কি খুন হতে হল পঞ্চায়েত প্রধানকে?
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে তৃণমূলের ‘দাপুটে’ নেতা সইফুদ্দিন লস্করকে গুলি করে খুন নিয়ে রাজ্য তোলপাড়। সেই আবহেই দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় প্রাণ গেল আমডাঙা পঞ্চায়েতের প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডলের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ আমডাঙা থানার কামদেবপুর বাজার এলাকায় কিছু লোকজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন রূপচাঁদ। আচমকাই বোমা পড়তে থাকে সেখানে। জখম হন রূপচাঁদ। তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার পরে পাঠানো হয় বারাসতের নার্সিংহোমে। পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। রূপচাঁদের উপরে হামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যার পর থেকে তৃণমূলের লোকজন ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। বেশ কিছু ক্ষণ অবরোধের জেরে উত্তরবঙ্গগামী বহু বাস, গাড়ি আটকে পড়ে। পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার রূপচাঁদের দেহ গ্রামে ফেরার কথা।
তৃণমূল নেতার মৃত্যুর পর থেকেই থমথমে আমডাঙা। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি রুখতে বারাসত পুলিশ জেলার সুপারের নেতৃত্বে একটি বিশাল দল ঘটনাস্থলে রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, রূপচাঁদকে লক্ষ্য করেই বোমা মারা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকেও তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, দু’জন পায়ে হেঁটে অনেক ক্ষণ ধরেই রূপচাঁদের গতিবিধির উপর নজর রাখছিলেন। পঞ্চায়েত প্রধানকে রাস্তার এক প্রান্তে ফাঁকা জায়গায় দেখতে পেয়েই তাঁরা বোমা ছোড়েন। এর পরেই সেখানে থেকে পালিয়ে কামদেবপুর বাজারের ভিড়ে মিশে যান তাঁরা। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পাল্টা রূপচাঁদের অনুগামীরাও বোমা মারতে শুরু করেন। পরে রাস্তায় বেশ কিছু বোমা পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ এসে সেগুলি উদ্ধার করে। কিন্তু পঞ্চায়েত প্রধান খুনের প্রকৃত কারণ কী, সে ব্যাপারে পুলিশের তরফে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল নেতার সঙ্গে রাজনৈতিক কিংবা ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। আনোয়ার ছাড়াও তিন জনের নাম ছিল পরিবারের দায়ের করা এফআইআর-এ। তাঁরা হলেন তোয়েব আলি মণ্ডল, পাপ্পু এবং আফতার। তোয়েবেরই ছেলে আনোয়ার।
তবে এলাকাবাসীর একাংশের মত, কামদেবপুর হাটের দখল নিয়ে অনেক দিন ধরেই তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীকোন্দল চলছিল। তার জেরে খুন হয়ে থাকতে পারেন রূপচাঁদ। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের এক প্রান্তে বোদাই, অন্য প্রান্তে আমডাঙা গ্রাম। এই দুই পঞ্চায়েতের মধ্যে কার দখলে হাট থাকবে, তা নিয়েই বিবাদ চলছিল। যদিও এলাকার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ বৃহস্পতিবার রাতেই অস্বীকার করেছেন আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকার রহমান। রূপচাঁদের উপর হামলার পর তিনি ও অর্জুন সিংহ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। সেখানে রফিকার বলেছেন, ‘‘বাজার সংলগ্ন ক্লাবের সামনে বসেছিলেন রূপচাঁদ। ওঁর কাছে একটা ফোন আসে। রাস্তার উল্টো দিকে যেতেই বোমা মারা হয়। কারা হামলা করল, পুলিশ তা খুঁজে বের করুক।’’ অর্জুন বলেন, ‘‘কারা হামলা করেছে, তদন্ত না করে বলা কঠিন। রাজনীতি করলে শত্রু থাকবেই। তবে এই হামলা ঠিক নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy