ছবি: সংগৃহীত।
বড় পুজো নয়, পাড়ায় পাড়ায় ছোট পুজোগুলোকে হাতিয়ার করেই ‘দুর্গাপুজো রাজনীতি’তে ঢুকতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। তবে বড় পুজোর ‘চমক’ও আছে, দাবি দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের।
বিজেপি নেতারা সরাসরি নাম না বললেও সূত্রের খবর, শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং নামজাদা পুজোর সঙ্গে ইতিমধ্যেই যুক্ত হয়েছেন বা যুক্ত হওয়ার কথা চলছে রাজ্য নেতৃত্বের। আর এর মাধ্যমেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনসংযোগ বাড়াতে চাইছেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, হাজরা অঞ্চলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির অনতিদূরে ‘সঙ্ঘশ্রী’ নামক একটি ক্লাবের পুজোর সভাপতি করা হয়েছে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকে। মমতার সঙ্গেও এই পুজোর সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এত দিন সেই ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্লাবের সহকারী সম্পাদক সৌরদীপ দত্ত বলেন, ‘‘কার্তিকবাবু ছিলেন আমাদের প্রধান উপদেষ্টা। এ বছর তিনি আর পুজো কমিটিতে নেই। সায়ন্তন বসু পুজো কমিটির সভাপতি হয়েছেন।’’ যদিও ক্লাবের সভাপতি শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘ব্যক্তিগত কারণে বেশ কিছু দিন ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। গত বছর এবং এ বছরের পুজোয় ওরা আমায় ডাকেনি। যা হয়েছে বলে শুনছি, তা আনুষ্ঠানিক ভাবে হয়নি। আমি দু’-এক দিনের মধ্যেই বৈঠক ডাকব।’’ আর কার্তিকবাবুর বক্তব্য, ‘‘সরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। শুনেছি, বিজেপি স্টল চেয়েছিল। ক্লাবের সভাপতির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে।’’
একই ভাবে সোনারপুর, যাদবপুর, সন্তোষপুর, বেহালা, টালিগঞ্জ, কালীঘাট, রাসবিহারী-সহ দক্ষিণ এবং উত্তর কলকাতার বহু মাঝারি ও ছোট পুজোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিজেপি। শহরতলির বেশ কিছু ক্লাবের সঙ্গেও তাঁদের কথা চলছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি। তবে এখনই সেগুলির নাম তাঁরা বলতে চাইছেন না। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘পুজোর কয়েক সপ্তাহ আগে আমরা চমক দেব। গোটা রাজ্যে অসংখ্য পুজোর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। দুর্গাপুজো নিয়ে তৃণমূলের জমিদারি আর চলবে না।’’ বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, বেশ কিছু পুজো উদ্বোধনের
জন্য দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে নিয়ে আসারও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, সপ্তাহখানেক আগে দিল্লিতে শাহ রাজ্য নেতৃত্বকে পুজোয় অংশগ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একই কথা বলেছিলেন রাজ্যের বিজেপি সাংসদদের। তার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছেন রাজ্য নেতারা। কিন্তু কী ভাবে পুজোর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা? সম্প্রতি বিভিন্ন ক্লাবের খুঁটি পুজোতে তাঁদের উপস্থিতি তো বড় একটা চোখে পড়েনি?
বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, বড় পুজো কমিটিগুলিতে এখনই ঢুকে পড়া যে সম্ভব নয়, তা তাঁরা বিলক্ষণ জানেন। ফলে তাঁরা কথা বলছেন মাঝারি এবং ছোট পুজোগুলোর সঙ্গে। মূলত দু’ভাবে এই পুজোগুলোতে ঢুকছেন তাঁরা। এক, অর্থ সাহায্যের ‘প্রলোভন’ দেখানো হচ্ছে। এবং দুই, আশপাশের যে বড় পুজোগুলোর জন্য ছোট বা মাঝারি পুজোগুলো ‘মার’ খায়, বলা হচ্ছে, সেই বড় পুজোগুলো কোনও বেআইনি কাজ করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবেন বিজেপি নেতারা। রাস্তা আটকানো থেকে যত্রতত্র ব্যানার-হোর্ডিং লাগানো, গেট তৈরি— সমস্ত বিষয়েই ‘তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ’ বড় পুজোগুলোকে বিড়ম্বনায় ফেলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ ভাবেই এলাকায় নিজেদের ‘গুরুত্ব’ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন বিজেপি নেতারা।
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর বক্তব্য, ‘‘ইতিমধ্যেই সল্টলেক, দক্ষিণ কলকাতা এবং জেলার অন্তত ৫০টি পুজো কমিটির সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কথা হয়েছে।’’ রাজ্য দলের আর এক সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, উত্তর কলকাতার বেশ কিছু পুজোর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। রাজুর কথায়, ‘‘ছোট এবং মাঝারি পুজোগুলোই আমাদের টার্গেট।’’
সূত্রের খবর, বিজেপির সদস্য সংগ্রহের জন্য জেলায় জেলায় প্রায় ২০ হাজার বিজেপির বিস্তারক ঘুরছেন। সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি পুজো কমিটি এবং ক্লাবগুলোকে নিজেদের দিকে টেনে নেওয়ার কাজও করবেন তাঁরা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy