রামনবমীর মিছিলে হাঁটবেন বিজেপি নেতা, কর্মীরাও। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এগিয়ে আসছে। সেই ভোটে ‘রামচন্দ্রের ভূমিকা’ বড় হবেই বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির। বস্তুত, তারা রামচন্দ্রের ভূমিকা ‘বড়’ করতে চায়। সেই লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ প্রতিবারই রামনবমী পালন করে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। এ বার সেই কর্মসূচিতে বাড়তি গুরুত্ব থাকছে। সেই সঙ্গে বিজেপিও সর্বশক্তি দিয়ে নামতে চাইছে আগামী বৃহস্পতিবার রামনবমীতে। দলের পক্ষে কোনও মিছিল বা অনুষ্ঠান না হলেও দলের নেতা, কর্মীরা যে অন্য সংগঠনের কর্মসূচিতে যোগ দেবেন, তা এক সপ্তাহ আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করে দিল রাজ্য বিজেপি।
‘রাম’ নাম যে ভোটের অঙ্কে প্রভাব ফেলতে পারে, সেটা গেরুয়া শিবির বেশি করে মনে করতে শুরু করেছে সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলের পরে। বিজেপি ওই আসনে তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছে। কিন্তু দলের নেতারা মনে করছেন, সংখ্যালঘু ভোট শাসক তৃণমূলের থেকে সরছে। সেই ভোট নিজেদের ভোট বাক্সে না এসে বাম-কংগ্রেস জোটের দিকে যে যেতে পারে, সেই ইঙ্গিতও দিয়েছে সাগরদিঘি। বিজেপি তাই মনে করছে, মে মাস নাগাদ হলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিন্দু ভোট এককাট্টা করতে হবে। সেই কাজটা করতেই রামনবমীর উপরে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
অতীতেও বিজেপি নেতাদের রামনবমীর মিছিলে, সভায় দেখা গিয়েছে। অস্ত্র হাতে নিয়েছেন দলের নেতা দিলীপ ঘোষ। কিন্তু এ ভাবে সাংবাদিক বৈঠক আগে থেকে রামনবমীর মিছিলে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের যোগদানের ঘোষণা হয়নি। বৃহস্পতিবার দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিজেপি কোনও কর্মসূচি নেবে না। তবে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে রাজ্যে এক হাজারের বেশি অনুষ্ঠান হবে এবং তাতে বিজেপির নেতা কর্মীরা যোগ দেবেন।’’
বিজেপির এই ঘোষণা নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁদের মোদীর ছবি দিয়ে কিংবা রাজ্যের নেতাদের ছবি দিয়ে কাজ হয় না, তাঁরা তো ভগবানের ছবি নিয়ে পথে নামবেই। কিন্তু আমরা পুজো করি ভগবানের। যে যাঁর মতো ঈশ্বরের পুজো করি, ভোটের রাস্তায় নামাই না।’’
সরাসরি নিজেদের নামে না হলেও বিজেপি কিছুটা ‘আড়াল সরিয়ে’ রামনবমী পালনে উদ্যোগী হলেও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সরাসরি রাজ্যের সর্বত্র কোনও না কোনও অনুষ্ঠান করার লক্ষ্য নিয়েছে। সংগঠনের সর্বভারতীয় সহ সম্পাদক শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘এই বছরটা পরিষদের ৬০ বছর। আর এক বছরের মধ্যেই অযোধ্যায় নতুন মন্দিরে রামলালা আসবেন। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচুর আবেগ। আমরা তাই ঠিক করেছি রাম এবং রামরাজত্বের স্বপ্নের কথা নিয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছাব।’’ শচীন্দ্রনাথ আরও জানিয়েছেন, শুধু একটা দিনের কর্মসূচি নয়, ৩০ মার্চ রামনবমী থেকে এপ্রিলে হনুমান জয়ন্তী পর্যন্ত ‘রাম মহোৎসব’ পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিষদ।
বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই কি এ বার কর্মসূচিতে বাড়তি গুরুত্ব? এই প্রশ্নের জবাবে শচীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমাদের যে কর্মসূচি, তার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। আমরা ভগবান রামকে পুরুষোত্তম মনে করি। তাঁর আদর্শের কথা বলি। আমরা রামরাজত্ব মানে সব দিক থেকে উন্নত ভারতের কথা ভাবি। এটাও মনে করি যে, রামের পুজোয় সব ধর্মের ভারতীয়ের অংশ নেওয়া উচিত।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশেই গ্রামে গ্রামে পরিষদ রামনবমী পালন করবে। সব জায়গায় তো আর পঞ্চায়েত নির্বাচন নেই। তাই রাজনীতি মেশাবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy