শনিবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছেন বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের মামলায় এ বার চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে তলব করল সিবিআই। শনিবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই আরজি কর-কাণ্ডের তদন্ত চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তিনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হেফাজতেই রয়েছেন। সন্দীপের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত বিরূপাক্ষ। তাঁকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযোগ, ঘটনার দিন আরজি করেই ছিলেন বিরূপাক্ষ। কেন তিনি ওই হাসপাতালে গিয়েছিলেন, সে বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
আরজি করের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই সেই সূত্র ধরে বিরূপাক্ষ, অভীক দে-র মতো চিকিৎসকদের নামও প্রকাশ্যে আসে। বিরূপাক্ষ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক। তাঁর বিরুদ্ধে মেডিক্যাল কলেজে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, হাসপাতালগুলিতে তাঁরা ভয়ের রাজত্ব তৈরি করেছিলেন। তাঁদের ভয়ে অধিকাংশ জুনিয়র ডাক্তারকে তটস্থ থাকতে হত। আরজি কর আবহে তাঁদের বিরুদ্ধে বৌবাজার থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়। বিরূপাক্ষকে ইতিমধ্যে সাসপেন্ড করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্যাথোলজি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক ছিলেন বিরূপাক্ষ। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে সম্প্রতি একটি অডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল (যদিও সেই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তার সূত্র ধরেই উঠে আসে বিরূপাক্ষের নাম। দাবি করা হয়, সেই অডিয়োতে যে কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছে, তা বিরূপাক্ষের। বিরূপাক্ষকে সেই অডিয়োয় ‘হুমকি’ দিতে শোনা গিয়েছিল। অভিযোগ, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চলত বিরূপাক্ষের ‘দাদাগিরি’। তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের হুমকি দিতেন। বিরূপাক্ষ যদিও তাঁর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিরূপাক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর প্রথমে তাঁকে বর্ধমান থেকে কাকদ্বীপে বদলি করা হয়েছিল। অভিযোগ, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্টিনে ২৩,৮০০ টাকা বাকি রেখেই চলে গিয়েছিলেন তিনি। ক্যান্টিন থেকে নাকি তিনি দেদার চা, বিস্কুট, সিগারেট খেতেন। কিন্তু টাকা দিতেন না। বার বার চেয়েও বিরূপাক্ষের কাছ থেকে প্রাপ্য আদায় করতে পারেননি, অভিযোগ বর্ধমান মেডিক্যালের ক্যান্টিনের মালিকের।
বিরূপাক্ষের বিরুদ্ধে ডাক্তারিতে ভর্তি করানোর নামে এক ছাত্রের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগও প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগ, চার বছর আগে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির এক ছাত্রকে ডাক্তারিতে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি দু’দফায় মোট আট লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ওই ছাত্রকে তিনি ডাক্তারিতে তো সুযোগ করে দিতে পারেনইনি, টাকাও ফেরত দিচ্ছিলেন না। এই নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে তিনি ৪৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে জানায় ছাত্রের পরিবার। বাকি টাকা ফেরতের আশ্বাসও দেন। ওই ছাত্রের বাবা জানান, ২০২১ সালে তিনি বিরূপাক্ষের বিরুদ্ধে জলঙ্গি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু ছ’মাস পুলিশ পদক্ষেপ করেনি। পরে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হলে আগাম জামিন নিয়ে নেন বিরূপাক্ষ। এ বার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সেই চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন মামলায় ডাকল সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy