প্রার্থী বিকাশ ভট্টাচার্যের রাজ্যসভায় যাওয়া নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁকে ঘিরে বাম ও কংগ্রেস নেতারা। বিধানসভায় মমঙ্গলবার
সংসদের কোনও কক্ষেই কোনও প্রতিনিধি নেই! বাংলার বামেদের জন্য স্বাধীনতার পরে এমন বেনজির পরিস্থিতির অবসান ঘটিয়ে স্বস্তি এনে দিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তারই পাশাপাশি কংগ্রেসের সমর্থনে সিপিএম প্রার্থী রাজ্যসভায় যাওয়ায় জোট-শিবিরও উজ্জীবিত।
নির্দল প্রার্থী দীনেশ বজাজের মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাওয়ায় তৃণমূলের চার প্রার্থীর মতো বিকাশবাবুরও রাজ্যসভায় যাওয়া নিশ্চিত। প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মতোই কলকাতার আরও এক প্রাক্তন মেয়রকে রাজ্যসভায় পাঠাল সিপিএম। গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ বলছে, প্রার্থী বিকাশবাবুর রাজ্যসভা-যাত্রা নিশ্চিত করতে মুখ্য ভূমিকা নিলেন আইনজীবী বিকাশবাবুই। নির্দল দীনেশের হলফনামায় গুরুতর ত্রুটি চিহ্নিত করে, মৌসম বেনজির নূরের মনোনয়নে তথ্যের অসম্পূর্ণতা নিয়ে অভিযোগ করে, শুনানিতে আইনজীবীর টিম নিয়ে সওয়াল করে লড়ে গিয়েছিলেন বিকাশবাবু। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দীনেশের মনোনয়ন খারিজ হওয়ায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।
রাজ্যসভায় জোট-যাত্রার জেরে রাজনৈতিক শিবিরের চর্চায় ফের ফিরে এসেছে আব্দুল মান্নান-বিকাশ জুটির কথা। সারদা-কাণ্ডে প্রতারিতদের জন্য আইনি লড়াইয়ে সহায়তা চেয়ে ৬ বছর আগে দিল্লিতে কংগ্রেসের দুঁদে আইনজীবীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছিলেন মান্নান। কেউ এগিয়ে আসেননি। শেষমেশ আইনি লড়াই লড়েছিলেন বিকাশবাবু। সেই মামলাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ধনেখালিতে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু-সহ আরও মামলা দু’জনে জুটি বেঁধে লড়েছেন। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের ‘জগাই-মাধাই’ বলে আক্রমণ করেছেন। বামেদের সমর্থনেই বিরোধী দলনেতা হয়েছিলেন মান্নান। এ বার বিকাশবাবুকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করার ক্ষেত্রে মান্নানেরও বড় ভূমিকা ছিল। সেই অর্থে জোটের একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল এ দিন!
বিকাশবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘রাজনৈতিক কর্মীদের কোনও বৃত্ত সম্পূর্ণ হয় না। লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য তাঁদের লড়ে যেতে হয়।’’ তাঁর মতে, বাম ও কংগ্রেসের যৌথ প্রার্থীর যাত্রাভঙ্গ করার জন্য নির্দল প্রার্থী খাড়া করে তৃণমূল-বিজেপির গোপন বোঝাপড়া হচ্ছিল। আইনি পথেই যে সেটা ভেস্তে দেওয়া গিয়েছে, এটাও একটা লড়াই। বিকাশবাবুর কথায়, ‘‘ভোটে হলে আরও ভাল হত। তৃণমূলের মুখোশ আরও খুলে যেত! বিধায়ক কেনাবেচা, টাকার খেলা— এ সব এ রাজ্যে চালু করেছে তৃণমূলই। বিজেপিও তা-ই করছে আরও জোরালো ভাবে।’’
মান্নানের মতে, ‘‘বিকাশবাবু নির্বাচিত হওয়ায় শাসক দল উপযুক্ত জবাব পেল। ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির হয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আমরা বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আরও জোরালো লড়াই করতে পারব।’’ বিধানসভা থেকেই এ দিন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী ও লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীকে বিকাশবাবুর জয়ের খবর দেন মান্নান। তার পরে যান নার্সিংহোমে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের কাছে। সোমেনবাবু ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, সংসদের ভিতরে-বাইরে এবং এ রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ লড়াই তীব্র হবে। অধীরবাবুরও আশা, মাঠে-ময়দানে জোটের জন্য ইতিবাচক বার্তা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy