লখনউ, ৫ মার্চ: রাজ্য বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এক মাঝি পরিবারের কাহিনি বললেন যোগী আদিত্যনাথ। বললেন, এ বারের মহাকুম্ভের ৪৫ দিনে শুধু নৌকা চালিয়ে পরিবারটি মুনাফা করেছে ৩০ কোটি টাকা!
যোগী ইতিমধ্যেই দাবি করেছিলেন, এ বারের কুম্ভমেলায় ৩ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। এ কথা সত্যি হলে ফেব্রুয়ারি মাসে জিএসটি থেকে উত্তরপ্রদেশের আয় তেমন বাড়ল না কেন, সেই প্রশ্ন তুলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছিল কংগ্রেস। প্রয়াগরাজের নৌকাচালকেরা ‘শোষণের শিকার’ বলে রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে সরব হয়েছিল বিরোধী সমাজবাদী পার্টি। তারই পাল্টা হিসেবে যোগী নিজের বক্তৃতায় তুলে ধরেন ৩০ কোটির ওই আখ্যান। বলেন, ‘‘আমি একটি মাঝি পরিবারের সাফল্যের গল্প বলছি। পরিবারটির ১৩০টি নৌকা আছে। ৪৫ দিনে তাঁরা ৩০ কোটি টাকা লাভ (যোগীর কথায়, ‘শুদ্ধ বচত’) করেছেন। অর্থাৎ প্রতিটি নৌকা থেকে আয় হয়েছে ২৩ লক্ষ টাকা। দৈনিক ৫০-৫২ হাজার টাকা তাঁরা আয় করেছেন প্রতিটি নৌকা থেকে।’’ যোগী এই দাবি করতেই টেবিল চাপড়ে তাঁকে সমর্থন করেন বিজেপি বিধায়কেরা।
যোগীর কথায়, ‘‘হেনস্থা, অপহরণ, ডাকাতি, খুনের একটিও ঘটনা ঘটেনি। ৬৬ কোটি মানুষ এসেছেন, এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে খুশি মনে চলে গিয়েছেন।’’ সরকারের মুনাফা নিয়ে কংগ্রেস তাঁকে কটাক্ষ করলেও যোগী ফের দাবি করেছেন, মহাকুম্ভ উপলক্ষে ৭৫০০ কোটি টাকা লগ্নির ফলে ৩ লক্ষ কোটির ব্যবসা হয়েছে। হোটেল ব্যবসায়ীদের আয় হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা, খাবার ও নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ক্ষেত্রে আয় ৩৩ হাজার কোটি, পরিবহণে দেড় লক্ষ কোটি। এ ছাড়া পুজো দেওয়া ও তার সামগ্রী ঘিরে ২০ হাজার কোটি, অনুদান বাবদ ৬৬০ কোটি, টোল ট্যাক্স বাবদ ৩০০ কোটি এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৬৬ হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছে। দু’শোরও বেশি রাস্তা চওড়া করা হয়েছে। ১৪টি উড়ালপুল, ৯টি আন্ডারপাস এবং ১২টি করিডর নির্মিত হয়েছে। এই সব পরিকাঠামোর সুবিধা আগামী কয়েক দশক ধরে পাবে উত্তরপ্রদেশ।
যোগী বলেন, ‘‘প্রায়ই দেখি, ভারতের বিষয়ে বিদেশি সংবাদমাধ্যম খুব নেতিবাচক কথাবার্তা বলে থাকে। কিন্তু এ বার ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলেছে, ‘মহাকুুম্ভে আমেরিকার জনসংখ্যার থেকেও বেশি মানুষ এসেছেন।’ বিবিসি একে ‘মানবতার সবচেয়ে বড় সমাগম’ বলেছে। (পাকিস্তানের) এক্সপ্রেস ট্রিবিউন একে বলেছে, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধার্মিক সমাগম’। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস বলেছে, ‘এখানে শুধু পুণ্যার্থীরা নন, নেতারা এবং বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরাও এসেছেন’।’’ বিরোধীদের উদ্দেশে যোগীর কটাক্ষ, ‘‘আপনাদের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে, কারণ মানুষ আর আপনাদের কথা শুনছেন না।’’ সংবাদ সংস্থা
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)