ফের বিতর্কে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। এ বার কেন্দ্রের ‘বেটি পড়াও’ কর্মসূচিকে রাজ্যের কন্যাশ্রী প্রকল্পের চেয়ে ‘ভাল’ আখ্যা দিয়ে রাজ্য সরকার ও শাসক দলের উষ্মার মুখে পড়লেন তিনি।
শুক্রবার সল্টলেকে একটি অনুষ্ঠানে এসে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘কন্যাশ্রী সীমিত আর্থিক সাহায্য। কিন্তু বেটি পড়াও দেশ ও সমাজের উন্নয়নে মেয়েদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।’’ রাজ্যপাল কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দু’টি প্রকল্পের এ ভাবে তুলনা করায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যপাল প্রবীণ ব্যক্তি। তার উপর কবিও। তাই বোধহয় অঙ্কটা ভাল জানেন না। বেটি পড়াও প্রকল্পে সারা দেশের জন্য কেন্দ্র বরাদ্দ করেছে ১০০ কোটি টাকা। আর কন্যাশ্রী প্রকল্পে রাজ্য ইতিমধ্যে ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছে।’’ একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘রাজ্যপাল পদের মেয়াদ শেষ হলে কেশরীনাথ কি আবার বিজেপির রাজনীতিতে ফিরতে চান? দেখা হলে বুঝতে চাইব তিনি কেন এ সব করছেন? ঠিক কী চাইছেন?’’
রাজ্যপালের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত ইদানীং প্রায়ই হচ্ছে। কয়েকদিন আগেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য মালদহের ডিভিশনাল কমিশনারকে মুর্শিদাবাদে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এ ব্যাপারে তাঁর এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলে রাজ্য। কেশরী পাল্টা বলেন, ওরা আগে নিজের মুখের ময়লা সাফ করুক।
সেই বিতর্কের আবহ স্বাভাবিক হওয়ার আগেই নতুন বিরোধের ক্ষেত্র তৈরি হল কি না, তা নিয়ে প্রশাসনের অন্দরে চর্চা চলছে। কন্যাশ্রী এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফল্যের তালিকায় সবার উপরে। দ্য হেগ-এ আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই প্রকল্প রাষ্ট্রপুঞ্জের সেরা পুরস্কার জিতে নেওয়ার পরে কন্যাশ্রী-কে আরও বেশি করে তুলে ধরা হচ্ছে। বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণে এই প্রকল্পের বিশেষ উল্লেখ রয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে মমতা ঘোষণা করেছেন রূপশ্রী। এই সব প্রকল্পের ‘সুফল’ যাদের কাছে পৌঁছয় তাদের একটি বড় অংশই গ্রামের। এই অবস্থায় রাজ্যপাল কেন্দ্রের বেটি পড়াও-কে বেশি কার্যকর প্রকল্প বলায় বিষয়টি রাজনৈতিক মাত্রা পেয়ে গেল বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা।
শাসকপক্ষ যখন রাজ্যপালের বক্তব্যের সমালোচনায় সরব তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণ সরকার তৈরি করে দেয়। তিনি পড়েন। কিন্তু বাইরে জনগণের সামনে তিনি সেটাই বলবেন, যা বিশ্বাস করেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy