Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Bengali

West Bengal Culture: পশ্চিমবঙ্গে প্রথম 'বাংলা সংস্কৃতি বলয়' সম্মেলন, প্রান্তিক সংস্কৃতিকে এগিয়ে রাখার শপথ

বাংলা সংস্কৃতি বলয় সংক্রান্ত যাবতীয় পর্যালোচনা করার সুবিধার্থে পশ্চিমবঙ্গকে মোট পাঁচটি বিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।

বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতির উপর গবেষণাধর্মী কাজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতির উপর গবেষণাধর্মী কাজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২২ ১৭:১৪
Share: Save:

১০ এপ্রিল বাংলা সংস্কৃতি বলয় সংক্রান্ত বিশদ আলোচনা করতে পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম সম্মেলন সংঘটিত হয় জোড়াসাঁকোর রথীন্দ্র মঞ্চে। এই সম্মেলনে রাজা রামমোহন রায়ের সার্ধদ্বিশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ষব্যাপী উদ্‌যাপন কর্মসূচির নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়াও বাংলা সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট বর্ষব্যাপী কর্মসূচি ও বাংলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতির উপর গবেষণাধর্মী কাজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি ও ২১ মে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মোৎসব, বসন্ত উৎসব, পৌষপার্বণ উৎসব, বর্ষবরণ উৎসব পালন করা সহ বাউল উৎসব, ভাওয়াইয়া উৎসব, গম্ভীরা উৎসব, ঝুমুর ও টুসু-ভাদু উৎসব ইত্যাদি অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সম্মেলনে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বিশ্বের ২১টি দেশের বাংলা ভাষাভাষী সংস্কৃতি কর্মী প্রতিনিধি নিয়ে যে বাংলা সংস্কৃতি বলয় গঠিত হয়েছিল সেই বলয়ের অন্তর্গত ঢাকা সংসদ, আগরতলা সংসদ ও ধর্মনগর সংসদ গঠিত হওয়ার পর চতুর্থ সংসদটি সাফল্যের সঙ্গে গঠিত হল পশ্চিমবঙ্গে।

এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন 'লাল পাহাড়ির দেশে যা' গানটির গীতিকার কবি অরুণ চক্রবর্তী। উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বলেন, প্রান্তিক সংস্কৃতির চর্চা আগামী দিনে বাংলার সংস্কৃতিকে বহু দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলা সংস্কৃতি বলয় প্রান্তিক সংস্কৃতিকে যে এ ভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে, তা দেখে তিনি আপ্লুত। এই উদ্যোগকে তিনি সাধুবাদ জানান।

রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুলগীতির পাশাপাশি ভাওয়াইয়া, বাউল, ঝুমুর, পটের গান, সমবেত আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়।

রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুলগীতির পাশাপাশি ভাওয়াইয়া, বাউল, ঝুমুর, পটের গান, সমবেত আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

অরুণ চক্রবর্তী ছাড়াও সম্মেলনের সভাপতি মণ্ডলীতে ছিলেন বেশ কিছু প্রসিদ্ধ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। উদ্যোগপতি অলোক চন্দ, জাতীয় শিক্ষক মুকুন্দবিহারী বিশ্বাস, প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজল অধিকারী, লেখক অমলেশ দাশগুপ্ত এবং অনুপ বন্দোপাধ্যায়ের উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছিল।

বাংলা সংস্কৃতি বলয় বিশ্ব কমিটির পক্ষ থেকে কাজি মাহাতাব সুমন এবং সেবক ভট্টাচাৰ্য সম্মেলনে উপস্থিত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বাংলা সংস্কৃতি বলয়ের উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ ব্যখ্যা করে তাঁরা বলেন, ধর্ম, বর্ণ ও রাজনৈতিক দল-নিরপেক্ষ বাংলা সংস্কৃতির প্রতিটি ধারা ও বিভাগের সমন্বয়ে, লোকসংস্কৃতির যাবতীয় ইতিবাচক দিক নিয়ে কাজ করছে বাংলা সংস্কৃতি বলয়।

বাংলা সংস্কৃতি বলয় সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করার সুবিধার্থে পশ্চিমবঙ্গকে মোট পাঁচটি বিভাগে বিভক্ত করা হয়। উত্তরবঙ্গ সংসদ, উপকূলবর্তী সংসদ, দক্ষিণবঙ্গ সংসদ, গম্ভীরা সংসদ ও কেন্দ্রাঞ্চল সংসদ গঠন করে যাবতীয় কর্মসূচি ও গবেষণাধর্মী কাজ চালানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করে সম্মেলন মঞ্চ।

এই সম্মেলনের মূল আকর্ষণ হিসেবে ছিল, রাজা রামমোহন রায়ের জীবনের উপর আধারিত উপর শ্রুতি নাটক।

এই সম্মেলনের মূল আকর্ষণ হিসেবে ছিল, রাজা রামমোহন রায়ের জীবনের উপর আধারিত উপর শ্রুতি নাটক। ছবি: সংগৃহীত

আগামী ছ'মাসের মধ্যে অবশিষ্ট চারটি সংসদের সম্মেলন সম্পন্ন করার জন্য প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাজল অধিকারী মুখ্য উপদেষ্টা এবং অমলেশ দাশগুপ্তকে সহকারী মুখ্য উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত করে একটি উপদেষ্টা মণ্ডলীও গঠিত হয়েছে।

শ্যামসুন্দর জুয়েলারি সংস্থার কর্ণধার রূপক সাহা ও পশ্চিমবঙ্গের উদ্যোগপতি কুশল মৈত্রকে সদস্য পদে নিযুক্ত করে গঠন করা হয় পৃষ্ঠপোষক মণ্ডলী। এই সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গের ১৮টি জেলা থেকে মোট ২২৬ জন লেখক-শিল্পী-গবেষক ও সংগঠক প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুলগীতির পাশাপাশি ভাওয়াইয়া, বাউল, ঝুমুর, পটের গান, সমবেত আবৃত্তি পরিবেশন করা হয়। তবে, এই সম্মেলনের মূল আকর্ষণ হিসেবে ছিল, রাজা রামমোহন রায়ের জীবনের উপর আধারিত শ্রুতি নাটক।

অনুষ্ঠান শেষে সভাপতি মণ্ডলীর পক্ষ থেকে কাজল অধিকারী বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরেন। বাংলা সংস্কৃতির মূল শিকড়ে গিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Bengali Culture West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE