আন্দোলন: শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত ভোটের দাবিতে মশাল মিছিল বামফ্রন্টের। শুক্রবার ধর্মতলায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ
রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশের উপরে অন্ধকার নেমে এসেছে, এই অভিযোগকে সামনে রেখে প্রতিবাদের মশাল মিছিল করল বামেরা। রাজপথে শুক্রবার সেই মিছিলে ভিড় হল চোখে পড়ার মতোই। কর্মী-সমর্থকদের প্রতি সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা আবেদন জানালেন, শুধু শহরে মিছিল নয়। গ্রামে গ্রামে পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধও গড়ে তুলতে হবে।
মনোনয়ন-পর্ব থেকে শুরু হওয়া ‘সন্ত্রাসে’র প্রতিবাদে এবং সুষ্ঠু পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবিতে ধর্মতলায় লেনিন মূর্তি চত্বরে দু’দিনের ধর্না-অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছিল ১৭টি বাম দল। ধর্নার শেষ দিনে হাজির ছিলেন দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়ার মতো দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির বাম কর্মী-সমর্থকেরা। ধর্নার শেষে ছিল মশাল মিছিল। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবুর কথায়, ‘‘রাজ্যে অন্ধকারের রাজত্ব কায়েম করেছে তৃণমূল। এই অন্ধকারের মধ্যে মশাল জ্বেলেই প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে হবে।’’
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবারই রায় দিয়েছিল, গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা আটকে সভা-মিছিল করা যাবে না। বামেদের এ দিনের মিছিল ছিল ধর্মতলা থেকে লেনিন সরণি হয়ে শিয়ালদহ পর্যন্ত। শুরুতে ম্যাটাডর-মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিমানবাবু বলেছিলেন, তাঁরা রাস্তার এক ধার দিয়েই মিছিল করতে চান। কিন্তু মিছিলের রাস্তায় পুলিশ যানবাহন ছাড়েনি। বিমানবাবু, সূর্যবাবুদের মিছিল যখন মৌলালি পেরিয়ে এনআরএসের দিকে, মিছিলের লেজ তখনও ধর্মতলায়। ফলে, মধ্য কলকাতায় কিছু ক্ষণ যানজট হয়েছিল মিছিলের জেরে। সাম্প্রতিক কালে কলকাতায় বামেদের যে সব মিছিল হয়েছে, তার মধ্যে এ দিনেরটা কলেবরে অন্যতম উল্লেখযোগ্য। প্রায় সব গণসংগঠনের লোকজনই যোগ দিয়েছিলেন প্রতিবাদ মিছিলে, ছিল বহু তরুণ মুখও।
মিছিল শুরুর আগে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু বলেন, ‘‘রাজ্যে উন্নয়ন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। উন্নয়নের মাথায় হেলমেট, মুখে রুমাল। তারা মুখ দেখাতে ভয় পাচ্ছে! উন্নয়নের নামে যে অন্ধকার চেপে বসেছে, তার থেকে আলোর দিকে যাওয়ার জন্য বামপন্থীদের সামনে থাকতে হবে।’’ তাঁর অভিযোগ, সন্ত্রাসের পাশাপাশি রাজ্যে প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা চলছে। দিল্লির সাম্প্রতিক বৈঠকের উদাহরণ দিয়ে সূর্যবাবুর কটাক্ষ, ‘‘গাঁধীজির সার্ধশতবর্ষ নাকি পালন করবেন মোদী এবং আরএসএস। গাঁধীজির ব্যাপারে তাদের পরামর্শ দিয়ে এসেছেন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। নানা বিষয়েই স্পষ্ট, তৃণমূল আর বিজেপির বোঝাপড়া আছে।’’ ক্ষিতি গোস্বামী, নরেন চট্টোপাধ্যায়, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ ঘোষ, সমীর পূততুণ্ডেরাও ছিলেন ধর্না ও মিছিলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy