সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন-পর্বে শাসক দলের ভূমিকা সমর্থনযোগ্য নয়, এই অবস্থান স্পষ্ট করেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। কাটোয়া, মঙ্গলকোটে তাঁর অনুগামীদের কাউকে পঞ্চায়েতে মনোনয়ন দিতে দেওয়া হয়নি, এই অভিযোগে সরকারি গাড়ি ও নিরাপত্তারক্ষী ছেড়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন রাজ্যের মন্ত্রী এবং জমিয়তের রাজ্য সভাপতি সিদ্দিকুল্লা। সেই প্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই সংগঠন। তবে মন্ত্রিসভায় থেকেই সিদ্দিকুল্লাকে ‘সুবিচার’ চাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে জমিয়তে। মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ মেনে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলোচনায় বসবেন সিদ্দিকুল্লা।
জমিয়তের রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে রবিবার পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে গোটা পরিস্থিতি আলোচনা হয়। ওই সংগঠনের সামনে এখন মূল লক্ষ্য, রাজ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানের মোকাবিলা করা। তাদের মতে, পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে এমন কোনও কাজ মেনে নেওয়া যায় না, যাতে আখেরে বিজেপির জমি শক্ত হয়। সেই ভাবনা থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাবেন জমিয়তের রাজ্য সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম। পূর্ব বর্ধমানে মাদক পাচারের অভিযোগে বহু রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের কর্মীকে ‘ফাঁসানো’ হচ্ছে বলেও অভিযোগ এসেছে এ দিনের বৈঠকে। প্রতিবাদ জানাতে ওই জেলার পুলিশ সুপারের কাছে দাবিপত্র দিতে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে জমিয়তে।
সিদ্দিকুল্লার কথায়, ‘‘নন্দীগ্রাম হোক বা অন্যত্র, অন্যায় হলে আমরা প্রতিবাদ করেছি। এখন ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির একজোট হওয়ার সময়। সেখানে অনভিপ্রেত ঘটনা বন্ধ হওয়া দরকার।’’ সরকারের মধ্যে পার্থবাবুর সঙ্গে সিদ্দিকুল্লার সম্পর্ক বরাবরই ভাল। ইতিমধ্যে দু’জনের ঘরোয়া ভাবে কথাও হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ মেনে মহাসচিবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে আলোচনায় বসবেন মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা। প্রয়োজনে জমিয়তের একটি প্রতিনিধিদলও পার্থবাবুর কাছে যাবে। পার্থবাবুর বক্তব্য, ‘‘সিদ্দিকুল্লার সঙ্গে কথা তো হচ্ছেই। উনি আলোচনায় বসতে চাইলে স্বাগত।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, কাটোয়া, মঙ্গলকোটে সিদ্দিকুল্লাদের সমস্যা অপূর্ব চৌধুরীর মতো শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে। ওই এলাকার সাংগঠনিক দায়িত্বে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রাজ্য তৃণমূলের তরফে বীরভূমের পর্যবেক্ষক, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আবার অনুব্রতের উপরে বিশেষ কথা বলেন না! সব মিলিয়ে সমস্যা জটিল হয়েছে। শেষ পর্যন্ত স্বয়ং মমতাকে আসরে নামতে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করায় সিদ্দিকুল্লাদের কাছে বার্তা গিয়েছে, শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। তাই পার্থবাবুর পক্ষে এখন মীমাংসা করা তুলনায় সহজ। তবে আদালতের নির্দেশে পঞ্চায়েত ভোটের প্রক্রিয়া একেবারে নতুন করে না হলে তাঁদের লোকজনের যে আর প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই, তা-ও বুঝতে পারছেন সিদ্দিকুল্লারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy