প্রস্তুতি: দূরত্ব-বিধি মেনে চলার জন্য বেলুড় মঠের ভিতরের রাস্তায় দেওয়া হয়েছে দাগ। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের জেরে গত ২৫ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল বেলুড় মঠ। তার ৮২ দিন পরে, আগামী ১৫ জুন থেকে ফের ভক্ত ও দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে মঠের দরজা। তবে দর্শনার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সেখানেও একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বুধবার সেই ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল। প্রসঙ্গত, আগামী শনিবার থেকে দর্শনার্থীদের জন্য খুলছে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরও।
মঠ সূত্রের খবর, এ বার থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১১টা এবং বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মঠ খোলা থাকবে। সংক্রমণ রুখতে মঠে ঢোকার সময়ে দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে একগুচ্ছ নিয়মকানুন। মঠের মূল প্রবেশপথের বাইরে প্রায় ৪০ ফুট লম্বা একটি বাঁশের ছাউনি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে মিনিট দশেক জিরিয়ে নিয়ে তবেই মূল প্রবেশপথের সামনে যাবেন দর্শনার্থীরা। সেখানে তাঁদের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হবে। কেন এই ব্যবস্থা? এক প্রবীণ সন্ন্যাসীর কথায়, ‘‘রোদে শরীরের তাপমাত্রা কিছু বাড়তে পারে। তাই অস্থায়ী ছাউনিতে জিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নীচে থাকলে তবেই তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হবে।’’ তাপমাত্রা পরীক্ষা ছাড়াও ওই প্রবেশপথের পাশে রয়েছে স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা। দরজার পাশে বসানো যন্ত্রে পা দিয়ে চাপ দিলে হাতে পড়বে স্যানিটাইজ়ার। তা দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করে এবং মাস্ক পরে তবেই লাইনে দাঁড়াতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
মঠের তরফে স্বামী জ্ঞানব্রতানন্দ জানিয়েছেন, মূল প্রবেশপথ থেকে জুতো ঘর পর্যন্ত বাঁধানো রাস্তায় একসঙ্গে ২৫ জন দাঁড়াতে পারবেন। দড়ি ও গার্ডরেল দিয়ে নির্দিষ্ট করে দেওয়া পথে ছ’ফুট দূরত্বে আঁকা চিহ্নের উপরেই দাঁড়াতে হবে তাঁদের। জুতো রাখার পরে ফের একই ভাবে দর্শনার্থীরা পৌঁছতে পারবেন শ্রীরামকৃষ্ণের মন্দিরে। সেখানে একসঙ্গে ১০ জন ঢুকতে পারবেন। মন্দিরে সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়ে ফের হাত সাফ করতে হবে তাঁদের। সে জন্য জীবাণুনাশক যন্ত্রের পাশাপাশি জলের কল এবং সাবানের বন্দোবস্তও থাকছে। মূল মন্দিরের দরজা থেকে রামকৃষ্ণদেবের মূর্তির আগে পর্যন্ত যাতায়াতের পথটুকুও নির্দিষ্ট করা থাকছে। তবে মূর্তির সামনে পৌঁছে শুধু হাতজোড় করে প্রণাম করে বেরিয়ে যেতে হবে দর্শনার্থীদের, বসে বা সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করা যাবে না।
আপাতত স্বামীজির ঘর এবং পুরনো মন্দিরে প্রবেশ বন্ধ থাকলেও নির্দিষ্ট পথ দিয়ে গিয়ে পর্যায়ক্রমে ব্রহ্মানন্দ মন্দির, সারদা মায়ের মন্দির ও স্বামীজির সমাধি মন্দির দর্শন করা যাবে। পরে ফের একই ভাবে নিয়ম মেনে বাইরে বেরোতে হবে। জিটি রোডের দিকে যাওয়ার জন্য মূল প্রবেশপথ এবং লঞ্চঘাটের দিকে যেতে শৌচালয়ের দিকের দরজা দিয়ে বেরোতে হবে। তবে মঠ খোলা হলেও প্রেসিডেন্ট মহারাজের দর্শন, প্রণাম, দীক্ষা দানের পাশাপাশি মিউজিয়াম, পল্লিমঙ্গল, সারদাপীঠ, বুকস্টল-সহ প্রসাদ বিতরণ, আরতি দেখা, গঙ্গায় স্নান— সবই বন্ধ থাকছে। মিলবে না হুইলচেয়ার ও ব্যাটারিচালিত গাড়ির পরিষেবাও। মঠের তরফে প্রতিদিন সমস্ত মন্দির ও জুতো ঘর দু’বার জীবাণুমুক্ত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy