মারমুখী: নলহাটি ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বুথের দরজা বন্ধ করে ছাপ্পা ভোট চলাকালীন চিত্র সাংবাদিক ছবি তুলতে এলে তাঁর দিকে তেড়ে আসে বাহিনীর লোকজন। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
হাতে রাখি। মেজাজে মারমুখী। দেখল নলহাটি।
বিশ্ব বাংলার ‘ব’ লেখা আকাশি রংয়ের ওই রাখিধারীরাই রবিবারের পুরভোটে তফাত গড়ে দিল। বাম, বিজেপি নেতারাও দিনের শেষে বলছেন, ‘‘রাখি-বাহিনীর দাপটেই পুরসভার ১৬টির মধ্যে কোণঠাসা অন্তত আটটি ওয়ার্ডে জেতার জায়গায় চলে গেল তৃণমূল।’’
এত দিন নলহাটির অলিতে, গলিতে ঘুরে শোনা যাচ্ছিল, বিদায়ী পুরপ্রধানের ওয়ার্ড ছাড়া সব ক’টিতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তবু, পুরবোর্ড যে তাঁরাই গড়বেন— সে নিয়ে নিঃসন্দেহ ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। কোন কৌশলে তা সম্ভব হতে পারে, সেটা ভাঙেননি জেলা নেতৃত্ব। বীরভূম জেলা কংগ্রেসের সভাপতি সৈয়দ মহম্মদ জিম্মির কটাক্ষ, ‘‘বহিরাগত রাখিবাহিনীর দাপট দেখিয়ে দিল, কোথায় ছিল এত আত্মবিশ্বাস।’’
এ দিন ভোট শুরু হতে দেখা গেল, প্রায় প্রতিটি বুথেই রয়েছেন চার-পাঁচ জন রাখিধারী। শাসকদলের হয়ে ভোট করাতেই তাঁদের আগমন। কৌশল ছিল, দুপুর একটার মধ্যে তৃণমূলের ভোটারদের ভোট দিয়ে দিতে বলা হবে। তার পরে মাঠে নামবেন রাখিধারীরা। বিকেলে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে দেখা গেল, বুথের দরজা বন্ধ করে অবাধে চলছে ছাপ্পা। ভোটকর্মীরা দেখেও দেখছেন না। সে ছবি তুলতে যেতেই রে রে করে এলেন চার-পাঁচ জন যুবক। হাতে রাখি। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোমের কথায়, ‘‘বুথ জ্যাম করে, ছাপ্পা ভোট দেওয়ার কাজ নিপুণ ভাবে করেছে ওই রাখিধারীরাই। আর প্রশাসন পিছন থেকে তাদের মদত জুগিয়েছে নিষ্ক্রিয় থেকে।’’ সিপিএমের আরও দাবি, জেলার একটি জায়গায় ভোট হয়েছে বলেই বাইরের লোক জড়ো করতে সুবিধে হয়েছে তৃণমূলের।
আরও পড়ুন: বিক্ষিপ্ত অশান্তি, ‘উধাও’ কমিশন
রাখিধারীদের দিয়ে ভোট করানোর পরিকল্পনা খোদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের, জানা যাচ্ছে তৃণমূল সূত্রেই। অনুব্রত নিজে মজা করে বলেন, ‘‘এ রাখি উন্নয়নের রাখি। ভোট প্রচারে আমাদের প্রার্থীরা এমন রাখি প্রচুর বিলিয়েছেন। জন্মাষ্টমী, স্বাধীনতা দিবসেও রাখি বিলি হবে। রাখি দিয়ে আমরা সবাইকে কাছে টানতে চাই। এতে অন্যায়ের কী আছে!’’ যা শুনে সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিমের টিপ্পনী, ‘‘ঠিক। রাখি দিয়েই যায় চেনা!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy