হাজি নুরুল ইসলাম। — ফাইল চিত্র।
প্রয়াত হলেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ হাজি নুরুল ইসলাম। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। দীর্ঘ দিন ধরে যকৃতের ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। গত লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাট কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করার পর অসুস্থতার কারণে বেশ কয়েক বার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল নুরুলকে। বুধবার দুপুর ১টা ১৫ মিনিট নাগাদ উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের বয়রা গ্রামে নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
নুরুলের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমাদের সহকর্মী তথা বসিরহাটের সাংসদ হাজি নুরুল ইসলামকে হারিয়ে আমরা শোকাহত।’’ নুরুলের পরিবারকে শোকবার্তা জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
সাংসদের পারিবারিক সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ছ’মাস ধরে নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন নুরুল। লোকসভা ভোটের সময়েও অসুস্থ ছিলেন। অসুস্থতার কারণে ভোটের প্রচারেও খুব বেশি বেরোতে পারেননি। মাঝে কয়েক বার দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় নুরুলকে। ভর্তি ছিলেন মুম্বইয়ের এমসেও। দীর্ঘ দিন কলকাতারও একটি বেসরকারি হাসপাতালেও তাঁর চিকিৎসা হয়।
২০০৯ সালে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে প্রথম বার সাংসদ হন নুরুল। এর পরের লোকসভা নির্বাচনে অর্থাৎ ২০১৪ সালে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে তাঁকে প্রার্থী করে দল। তবে সে বারের ভোটে হেরে যান তিনি। এর পরে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে নুরুলকে হাড়োয়ায় টিকিট দেয় দল। হাড়োয়ার সেই সময়কার বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক জুলফিকার আলিকে টিকিট না দিয়ে নুরুলকে প্রার্থী করেছিলেন দলনেত্রী মমতা। ২০১১ সালে মাত্র ১২০০ ভোটে জেতা হাড়োয়া আসন নুরুল জেতেন ৪৩ হাজারেরও বেশি ভোটে। এর পরের বিধানসভা ভোটেও (২০২১ সাল) হাড়োয়া থেকে জিতে বিধায়ক হন তিনি। গত লোকসভা নির্বাচনে (২০২৪ সাল) নুরুলকে আবারও বসিরহাট থেকে টিকিট দেয় দল। সেই নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়ী হন তিনি।
গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বসিরহাট কেন্দ্রের অন্তর্গত সন্দেশখালি তৃণমূলের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সেই সময় রেশন দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করে ইডি। সেই সূত্রেই উঠে আসে তাঁরই ঘনিষ্ঠ সন্দেশখালির নেতা শাহজাহান শেখের নাম। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে শাহজাহানের অনুগামীদের হাতে মার খেতে হয়েছিল ইডি আধিকারিকদের। তার পর থেকে দীর্ঘ দিন নিখোঁজ ছিলেন শাহজাহান। তাঁর গ্রেফতারির দাবিতেই সন্দেশখালিতে শুরু হয় আন্দোলন। শাহজাহান-সহ একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলে গ্রামবাসীরা পথে নামেন। বিজেপি এই আন্দোলনকে হাতিয়ার করে ঢালাও নির্বাচনী প্রচারে নেমেছিল। আন্দোলনের ঝাঁজ যত বাড়ছিল, ততই বাড়ছিল তৃণমূলের দুশ্চিন্তাও। অনেকে মনে করেছিলেন সন্দেশখালির কারণেই বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূলের হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। প্রচারের শেষ লগ্নে পাল্টা অডিয়ো প্রকাশ করে তৃণমূল দাবি করে, সন্দেশখালির আন্দোলন বিজেপির সাজানো। শেষমেশ বসিরহাট থেকে নুরুল কয়েক লক্ষ ভোটের ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থী তথা সন্দেশখালি আন্দোলনের মুখ রেখা পাত্রকে হারিয়ে জয়ী হন। যদিও সন্দেশখালি বিধানসভার নিরিখে এগিয়ে ছিলেন রেখা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy