নিচুতলার দাবি ছিল, শিল্পাঞ্চলে প্রার্থী করতে হবে দলের কোনও শ্রমিক নেতা বা নেত্রীকে। সেই দাবিকে গুরুত্ব দিয়েই আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে আইএনটিটিইউসি নেত্রী দোলা সেনকে প্রার্থী করল তৃণমূল। দলের কিছু কিছু অংশের দাবি ছিল, প্রার্থী স্থানীয় কেউ হলেই ভাল হয়। প্রার্থীর নাম ঘোষণার পরে অবশ্য তাঁরা আর সে সব মাথায় রাখছেন না। সিপিএমের হাতে থাকা এই লোকসভা আসন দখল করতে সবাই মিলে লড়াইয়ে নামতে চাইছেন তাঁরা। কার্যকরী সভাপতি (শিল্পাঞ্চল) ভি শিবদাসন, “আমরা শ্রমিক নেতা বা নেত্রী চেয়েছিলাম। তা-ই দেওয়া হয়েছে। সবাই একজোট হয়ে কাজ করব।”
গত বার এই কেন্দ্রে সিপিএমের বংশগোপাল চৌধুরীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তৃণমূলের মলয় ঘটক। তার পর থেকে অবশ্য এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটে ভরাডুবি হয়েছে বামেদের। আসানসোল থেকে জিতে রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছেন মলয়বাবু। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার লোকসভা ভোটে স্থানীয় কোনও শ্রমিক নেতা বা নেত্রীকে প্রার্থী হিসেবে চেয়ে দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীরা উচ্চ নেতৃত্বের কাছে মৌখিক আবেদন জানিয়েছিলেন। কারণ, এই লোকসভা আসনের অধিকাংশ ভোটারই নানা সরকারি-বেসরকারি শিল্প সংস্থা বা খনির কর্মী। তাই তাঁদের সঙ্গে শ্রমিক নেতা-নেত্রীদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।
আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ইস্কোর শ্রমিক সংগঠনের নেতা বাবু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কাউকে এখানে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে চেয়েছিলাম। দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা-ই চূড়ান্ত।” এ ক্ষেত্রে প্রার্থী স্থানীয় না হলেও তাঁর হয়ে সর্বশক্তি দিয়ে প্রচারে নামা হবে বলে জানান এই শ্রমিক নেতা। তৃণমূল অনুমোদিত কোলিয়ারি শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক হরেরাম সিংহের বক্তব্য, “স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করা হলে ভাল হয় বলে আগে জানিয়েছিলাম। তবে যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে তিনি স্থানীয় না হলেও এই এলাকায় নানা শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। তাই কোনও অসুবিধা হবে না।” মহিলা তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী আলপনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “প্রার্থিপদের ব্যাপারে শেষ কথা দলের উচ্চ নেতৃত্ব।”
বুধবার প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছে বামফ্রন্টও। আসানসোলে প্রার্থী হচ্ছেন গত তিন বারের সাংসদ সিপিএমের বংশগোপাল চৌধুরী। তৃণমূল প্রার্থীকে নিয়ে তিনি অবশ্য মাথা ঘামাতে নারাজ। বংশগোপালবাবু বলেন, “আমি এলাকার লোক। মানুষ আমাকে চেনেন। তাঁরা সবই জানেন-বোঝেন।” সিপিএমের আসানসোল জোনাল সম্পাদক পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “কোনও প্রার্থীকেই আমরা ছোট করে দেখছি না। এই শিল্পাঞ্চলে কল-কারখানার যা অগ্রগতি হয়েছিল, তা গত তিন বছরে থমকে গিয়েছে। সেই পরিসংখ্যান নিয়েই আমরা মানুষের কাছে যাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy