মায়ের অনুপস্থিতে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী পরিচারিকার কাজ না করতে চাওয়ায় মারধরের অভিযোগ উঠল অন্ডালের কাজোড়া রেল গেট এলাকার একটি পরিবারের ৪ সদস্যের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা নিয়ে উঠেছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও।
ছাত্রীর কাকা জানান, তাঁর বোন স্থানীয় বাসিন্দা অরবিন্দ মিশ্রর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে। রবিবার ওই পরিচারিকা অরবিন্দবাবুদের জানান, তিনি আত্মীয়ের বাড়ি যাবেন। তাই সোমবার থেকে দিন তিনেক কাজে আসতে পারবেন না। তখন অরবিন্দবাবুর পরিবারের সদস্যেরা প্রস্তাব দেন ওই ৩ দিন পরিচারিকার মেয়ে যেন কাজ করে যায়। সোমবার সকালে ওই ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে কাজ করার কথা বলেন অরবিন্দবাবুর পরিবারের এক সদস্য। খাসকাজোড়া উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী জানায়, স্কুল থাকায় সে কাজ করতে পারবে না। বিকেলে অরবিন্দবাবুরা ওই ছাত্রীকে নিজেদের বাড়িতে ডেকে এনে প্রশ্ন করেন, স্কুল যাওয়ার নাম করে সে কাজ কামাই করল কেন? ওই ছাত্রী জানায়, পড়াশোনার ক্ষতি হওয়ায় কাজ করতে যাওয়া সম্ভব নয়। এর পরেই আচমকা ওই ছাত্রীকে অরবিন্দবাবুরা মারধর করেন বলেন অভিযোগ। ওই ছাত্রী কোনওক্রমে বাড়ি পালিয়ে আসে।
যদিও কিছুক্ষণ পরে অরবিন্দবাবু, তাঁর দু’ভাই ও ছেলে মিলে ওই ছাত্রীর বাড়িতে চড়াও হন। ওই ছাত্রীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ছাত্রীর বাবা বাধা দিতে এলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারধরের জেরে মাথায় গুরুতর চোট পায় ওই ছাত্রী। তাকে খান্দরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় আহত ছাত্রীকে। বুধবার তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ফের তাকে মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু তখনই অরবিন্দবাবুরা সপরিবারে লাঠি হাতে পথ আটকান বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, অরবিন্দবাবুরা অভিযোগ প্রত্যাহার না হলে কোথাও যেতে দেওয়া হবে না বলে হুমকিও দিতে থাকেন বলে অভিযোগ ছাত্রীর কাকার।
ছাত্রীর বাবা মঙ্গলবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন অরবিন্দবাবুরাও। ওই ছাত্রীর এক আত্মীয়ের দাবি, স্থানীয় এক তৃণমূলের অনুগামীরা অভিযোগ তোলার জন্য চাপ দিচ্ছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অরিবন্দাবাবুরা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করে এডিসিপি (পূর্ব) অমিতাভ মাইতি জানান, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ওই ছাত্রীর কাকা ও অরবিন্দবাবুর এক ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy