এই রাস্তাটি ঘিরেই উঠছে অভিযোগ। —নিজস্ব চিত্র।
যাত্রী প্রতিক্ষালয়ের অভাব, রাস্তা দখল, যানজট-সহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত বারাবনির দোমহানি বাজার ও বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। প্রসঙ্গত যাত্রী প্রতিক্ষালয়, শৌচালয় ও পানীয় জলের ব্যবস্থার দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানানো সত্ত্বেও প্রশাসনের তরফে তাতে কোনও আমল দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসন্দাদের।
বারাবনি ব্লকের দোমহানি রোড সংলগ্ন বাজারা এলাকাটি অত্যন্ত জনবহুল। আসানসোল, বারাবনি-সহ সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার মানুষ ওই রাস্তাটি ব্যবহার করেন। প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন চুরুলিয়া, হরিপুর, জামুড়িয়া-সহ প্রায় শতাধিক গ্রামের প্রায় হাজার পঞ্চাশেক বাসিন্দা ওই রাস্তাটিই ব্যবহার করেন। যাত্রীবাহি বাসের পাশপাশি ওই রাস্তা দিয়ে সারাদিন প্রচুর সংখ্যক ট্রেকার ও অটোরিক্সাও চলে।
এ হেন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পাশে কোনও যাত্রী প্রতিক্ষালয় নেই বলে জানা গেল। নিত্য যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সব ঋতুতেই খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে থেকে বাস বা ট্রেকারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। দিন কয়েক আগে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বাস ধরতে সপরিবারে দাঁড়িয়ে আছেন স্থানীয় বাসিন্দা তারকনাথ সিংহ। তারকনাথবাবু বলেন, “প্রতিবারই এইভাবে বাড়ির মহিলা ও বাচ্চাদের নিয়ে রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ন্যূনতম যাত্রী পরিষেবাও দেয় না স্থানীয় প্রশাসন।’’
যাত্রীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শীতকালে অবস্থা কোনও ভাবে সামাল দেওয়া গেলেও গরম বা বর্ষাকালে ওইভাবে দাঁড়িয়ে থাকা রীতিমতো কষ্টকর। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, রাস্তার বেশিরভাগ অংশই দখল করে দোকানপাট বসিয়ে চলছে ব্যবসা। এর জেরে রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এখন এমন পরিস্থিতি যে, দু’টি গাড়ি পাশাপাশি যাতায়াতও করতে পারে না। এর জেরে ব্যস্ত সময়ে যানজটও দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই এলাকায়। উপযুক্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকায় আটকে থাকে অ্যাম্বুলেন্সও।
রাস্তার এই দুরাবস্থায় চিন্তিত ব্যবসায়ীদের একাংশও। তাঁদের আশঙ্কা, আগুন লাগলে দমকলের গাড়ি ঢোকারও জায়গা নেই।
বাসিন্দাদের সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন শাসক দলের নেতা-কর্মীরাও। তৃণমূল পরিচালিত বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতিও যে সাধারণ যাত্রীদের জন্য এই নূন্যতম পরিষেবা দিতে ব্যর্থ, তাও প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়ে যুব তৃণমূলের নেতা পাপ্পু উপাধ্যায় জানান, তাঁরাও সমস্যা মেটাতে আবেদন করেছেন। স্থানীয় দোমহনি পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান গৌতম মণ্ডল সমস্যার কথা স্বীকার করেও বলেন, “আসলে ওখানে জায়গার অভাব রয়েছে। খাস জমি দখল করে অবৈধ নির্মাণ গজিয়ে উঠেছে। সেগুলি ভেঙে ফেলা সম্ভব হচ্ছে না।’’ বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বুধন বাউরি অবশ্য জানান, দ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হবে। রাস্তার সম্প্রসারণ ও যাত্রী প্রতিক্ষালয় তৈরির জন্য জেলা পরিষদে আলোচনা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy