শহর জুড়ে প্রতিনিয়ত অসামাজিক কার্যকলাপ ঘটছে। চলছে চুরি, ছিনতাই, তোলা আদায়-সহ নানা দুষ্কর্ম। হেনস্থার শিকার হচ্ছেন মহিলা ও ছাত্রীরা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার জন্যই রানিগঞ্জে এই সব কাণ্ড ঘটছে এই অভিযোগ তুলে মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এলাকার এক বাসিন্দা। কমিশন অভিযোগের তদন্ত করতে বলে পুলিশকে চিঠি পাঠানোয় তাঁর অভিযোগ রেকর্ড করল পুলিশ। কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, মঙ্গলবার সমস্ত অভিযোগ ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছে।
রানি মজুমদার নামে ওই বাসিন্দা পুলিশের কাছে এর আগে পিটিশন দাখিল করেছিলেন। তা থেকে জানা গিয়েছে, গত বছর ২৯ এপ্রিল রানিগঞ্জে থানা থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে সুকান্ত উদ্যানের পাশে একটি ঝোপে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হলে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। সে জন্য পুলিশ ৭৫ জন স্থানীয় বাসিন্দাকে গ্রেফতার করে। রানির অভিযোগ, ঘটনায় আসল অভিযুক্তদের পুলিশ আড়াল করে। কিন্তু পুলিশের তাণ্ডবে অনেক সাধারণ বাসিন্দাকে ঘরছাড়া হতে হয়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সেই ঘটনা থেকেও শিক্ষা নেয়নি পুলিশ। যার ফলে শহরে এখনও মহিলারা নিরাপদ নন। রাস্তাঘাটে মেয়েদের কটূক্তি, উত্ত্যক্ত করা, এমনকী মদ্যপদের হাতে হেনস্থা হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। তিনি অভিযোগ করেন, একাধিক বার এমনও ঘটেছে, নিগ্রহের পরে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ কোনও রকম সহযোগিতা করেনি। তিনি নিজে রূপান্তরকামী হওয়ার কারণে নানা হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। রানি দাবি করেন, এই সব ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মহিলাদের নিরাপত্তার স্বার্থেই পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা এই সব অভিযোগের তদন্ত হওয়া উচিত। এ দিন পুলিশ তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করার পরেও তিনি অভিযোগ করেন, “আমি গত কয়েক বছর ধরেই এই সব ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। তাই পুলিশ আমাকেও নানা ভাবে হেনস্থা করছে।”
রানি জানান, আগে মানবাধিকার কমিশন ও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে এবং পুলিশকে পিটিশন দিয়ে যে সব অভিযোগ করেছেন, এ দিন সেগুলিই বলেছেন। এডিসিপি বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “আমরা ওঁকে ডেকে বক্তব্য রেকর্ড করেছি। তদন্ত হবে।”
এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সম্প্রতি নানা সংগঠনও সরব হয়েছে। ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পাদক রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানের বক্তব্য, “শিল্পাঞ্চলের অন্যতম পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহর রানিগঞ্জ। এখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে ব্যবসা-বাণিজ্য মার খাবে। তাতে অর্থনীতির ক্ষতি হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy