শোকার্ত পরিজন। নিজস্ব চিত্র
আগের দিন সন্ধ্যায় বোনের বাড়ি থেকে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু মাঝ রাস্তা থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন যুবক। বৃহস্পতিবার দুপুরে গলসিতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের কুলগড়িয়া সার্ভিস রোডের পাশে নর্দমা থেকে উদ্ধার হল তাঁর রক্তাক্ত দেহ। খুনে জড়িত সন্দেহে নিহত শেখ আসফারের (২৬) এক প্রতিবেশীর বাড়িতে ভাঙচুর চালায় ক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গলসির বড়মুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আসফার পেশায় ছিলেন রাজমিস্ত্রি। তাঁর স্ত্রী রোজিনা শাড়ি নকশার কাজ করতেন। সেই কাজের জন্য বোন রহিমার কাছ থেকে শাড়ি আনতে বুধবার বিকেলে গলসির কিশোরকোনা গ্রামে গিয়েছিলেন আসফার। সন্ধ্যায় সেখান থেকে ফেরার কথা থাকলেও ফেরেননি। বারবার চেষ্টা করেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি বলে জানান পরিজনেরা।
বৃহস্পতিবার খোঁজাখুঁজি করার সময়ে বাড়ির অদূরে ওই নর্দমা থেকে আসফারের দেহ মেলে। সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পাশেই মেলে একটি সাইকেল, লুঙ্গি ও এক জোড়া জুতো। খবর পেয়ে জড়ো হন এলাকার বাসিন্দারা। পরিজন ও পড়শিদের একাংশ দাবি করেন, সাইকেলটি আসফরের। কিন্তু ঘটনাস্থলে মেলা লুঙ্গি ও জুতো প্রতিবেশী যুবক শেখ রাজুর। এর পরেই রাজুর বাড়িতে চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। বাড়ির চাল ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। বাসিন্দাদের অনেকের দাবি, সকালে এলাকায় দেখা গেলেও দুপুর থেকে রাজু বেপাত্তা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসফার ও রাজুর পরিবারের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। মাস ছয়েক আগে আসফারদের একটি ছাগল মেরে ফেলে সে। তা নিয়ে দুই পরিবাদের মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। আসফার ছাড়া, পাড়ার আরও কয়েকজনের সঙ্গে রাজুর মাঝে-মধ্যেই গোলমাল বাধত বলে দাবি বাসিন্দাদের একাংশের। পড়শি শেখ নুর আলম, শুকুর শেখদের অভিযোগ, “দেহ যেখানে পাওয়া গিয়েছে, তার পাশেই রাজুর লুঙ্গি ও জুতো পড়ে ছিল। আমাদের অনুমান, খুনের পেছনে রাজুরই হাত রয়েছে।’’
মৃতের বাবা শেখ সামসুদ্দিনেরও অভিযোগ, ‘‘আমাদের একটি ছাগল মেরে দেওয়ার পর থেকে রাজুর সঙ্গে আমার ছেলের তিক্ততা তৈরি হয়েছিল। আমাদের অনুমান, সে জন্য ও ছেলেকে খুন করেছে।’’ তবে নিহতের স্ত্রী রোজিনা দাবি করেন, ‘‘রাজু আমার স্বামীকে খুন করতে পারে, কল্পনা করিনি।’’
গ্রামের বাসিন্দা তথা সাঁকো পঞ্চায়েতের প্রধান মহম্মদ আলি মোল্লার বক্তব্য, ‘‘পরিকল্পনা করেই আসফারকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। খুনের পিছনে যে বা যারা রয়েছে, সকলের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।” পুলিশের অনুমান, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় দেহ নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy