Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Suicide

Purba Bardhaman: প্রেম করে বিয়ের পর স্ত্রীয়ের গায়ের রং নিয়ে খোঁচা, গঞ্জনায় চরম পরিণতি বধূর

মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন। গ্রেফতার মৃতার স্বামী ও শ্বশুর।

প্রতি দিন গায়ের রং নিয়ে লাঞ্ছনা করা হত বলে অভিযোগ।

প্রতি দিন গায়ের রং নিয়ে লাঞ্ছনা করা হত বলে অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২২ ২১:৪১
Share: Save:

গায়ের রং কালো হওয়ায় প্রতিনিয়ত স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনেরা গঞ্জনা দিত। এমনকি তার জন্য সহ্য করতে হত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও। দিনের পর দিন এই দুর্ব্যবহার সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন বধূ। সোমবার চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলির বড় ধামাস গ্রামে। মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন মৃতার বাপেরবাড়ির লোকজন। মঙ্গলবার স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তেইশের সরোজিনী ঘোষের বাপেরবাড়ি হুগলি জেলার ভদ্রেশ্বরে। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলির বড় ধামাস গ্রামের বাসিন্দা দেবার্ঘ্য ঘোষের সঙ্গে তাঁর ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বছর চারেক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। দম্পতির আড়াই বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। মৃতার পিসেমশাই সুকুমার দাস জানান, ফেসবুকের মাধ্যমেই সরোজিনীর সঙ্গে পরিচয় হয় দেবার্ঘ্যর। সেখান থেকেই প্রণয়ের সম্পর্ক। দুই বাড়ির মত নিয়ে বিয়েও হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই গায়ের রং কালো বলে সরোজিনীকে খোঁটা দিতেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রতিনিয়ত গঞ্জনা ও লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়েছে তাঁদের মেয়েকে, অভিযোগ সুকুমারবাবুর। এমনকি স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন সরোজিনীর উপর যথেচ্ছ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও চালাতেন বলে অভিযোগ। সরোজিনীর বাপের বাড়ির অভিযোগ, গত দিন কুড়ি যাবৎ নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। সরোজিনীর বাবা স্বপন মণ্ডল মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে ভদ্রেশ্বরে নিয়ে চলে যান।

এর পর ১০-১২ দিন আগে সরোজিনীর শ্বশুর বাবলু ঘোষ নিজে ভদ্রেশ্বরে যান। আর অশান্তি হবে না, এমন ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়ে তাঁকে পূর্বস্থলির বাড়িতে নিয়ে যান সরোজিনীকে। তার পরেই এই ঘটনা! মৃতার বাবার কথায়, “গায়ের রং কালো বলে তাঁর মেয়েকে একই ভাবে খোঁটা দেওয়া থেকে শুরু করে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সমান ভাবে চালিয়ে যান জামাই ও তার বাড়ির লোকজন। ওই দুর্ব্যবহার মন থেকে আর মনে নিতে না পেরে মেয়েটা চরম পরিণতির পথ বেছে নিয়েছে।’’

সোমবারই পূর্বস্থলি থানার দ্বারস্থ হন সরোজিনীর পরিবার। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু করে স্বামী দেবার্ঘ্য ও শ্বশুর বাবলু ঘোষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতদের পেশ করা হয় কালনা মহকুমা আদালতে। বিচারক ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE