গ্রামে ‘সজলধারা’ প্রকল্প থেকে প্রতিটি বাড়িতে পাইপলাইনে জল সরবরাহ করা হয়। সেই জল ব্যবহার করা হচ্ছে এক তৃণমূল নেতার চাষের জমিতে, এমন অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েতের কোটালপুকুর এলাকায়। এ বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করেছে ‘পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী জুমিদ গাঁওতা’। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ওই তৃণমূল নেতা অভিজিৎ বাগদির পাল্টা দাবি, দলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। বনকাটি পঞ্চায়েতের তরফে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বনকাটি পঞ্চায়েতের কোটালপুকুর গ্রামে মাস তিনেক আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফের একটি পাম্প হাউস তৈরি করা হয়। মূলত গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই প্রকল্প। কিন্তু সেই প্রকল্পের জলে চাষ হচ্ছে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য আশা বাগদির স্বামী অভিজিৎ বাগদির জমিতে, অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী জুমিদ গাঁওতার। তাদের দাবি, গ্রামের বাসিন্দারা যাতে পানীয় জল পান, সে জন্য জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের তরফে এলাকায় একটি পাম্প হাউস করা হয়েছে। কিন্তু মানুষ পানীয় জল পাচ্ছেন না। পাম্প হাউসের জল পঞ্চায়েত সদস্য
আশা বাগদির স্বামী অভিজিৎ বাগদির ব্যক্তিগত জমিতে চাষে ব্যবহার
করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে সংগঠনের সম্পাদক সুনীল কিস্কুর দাবি, ‘‘আমরা অভিযোগ জমা দিয়েছি। পানীয় জলের অপব্যবহার হচ্ছে। পাম্প হাউসের জল তিনি নিজের মাঠে ব্যবহার করছেন।’’ বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের দাবি, ‘‘তৃণমূলের নিজেরাই সব লুটেপুটে খাচ্ছে। মানুষ জল পাচ্ছেন না। সেখানে জনপ্রতিনিধি মাঠে চাষ করছেন। এর তদন্ত হওয়া উচিত।’’
স্থানীয় সূত্রের দাবি, পাম্পটি চালানোর দায়িত্ব অভিজিতেরই। আশার দাবি, চাষে জল ব্যবহারের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভুল। পাম্প সবে দু’-তিন মাস হয়েছে। এখন ‘ওয়াশ’ করার কাজ চলছে। সেই জল বাইরে কোথাও ফেলতে হবে। তাঁর দাবি, গ্রামের লোকের সম্মতিতে পাম্প হাউসের জল বাইরে ফেলা হচ্ছে। সেখানে তাঁদের জমিও রয়েছে। সে দিকে জল যাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘পাম্প হাউস তৈরির আগেও আমার জমিতে চাষ হত। আসলে আমাকে ও আমার স্বামীকে কালিমালিপ্ত করতে তৃণমূলেরই কয়েক জন এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’ একই বক্তব্য অভিজিতেরও। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘বনকাটি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান পিন্টু বাগদি ও কয়েক জন মিলে এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’’
বনকাটি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সোমনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ প্রাক্তন প্রধান পিন্টু বাগদির সঙ্গে মঙ্গলবার চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)