ইদের বাজারে আতরের বিক্রি ভালই হয়। এ বারও উৎসবের আবহে আতরের সুগন্ধে মাতোয়ারা ক্রেতা-বিক্রেতা সকলেই। গত সাত দিনে আতরের বাজার জমজমাট ছিল বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। যদিও ভাল মানের আতরের চাহিদা সারা বছরই থাকে, দাবি তাঁদের। কয়েক দশক আগেও এই জেলাতেই আতর তৈরি হত। এখন সেই রীতি আর নেই বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
বর্ধমান শহরের তেঁতুলতলা বাজারে আতরের পাইকারি দোকান রয়েছে আনিসুর রহমানের। তাঁর পৈতৃক ব্যবসা এটি। তিনি জানান, ইদের আগে শেষ সাত দিনে প্রচুর মানুষ বিভিন্ন দামের আতর কিনেছেন। বিশেষ করে শনি ও রবিবার চাহিদা ছিল সব চেয়ে বেশি। কিশোর থেকে বৃদ্ধ, অনেকেই আতর নিয়মিত ব্যবহার করেন। আনিসুর বলেন, “দোকানে ২০ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত দামের আতর পাওয়া যায়। তবে চাহিদা বেশি ১০০ টাকার ১০ মিলিলিটার ও ৩০০ টাকার ১২ মিলিলিটার আতরের।”
আনিসুর জানান, ১৯৫২ সাল থেকে তাঁরা এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ২০-২৫ বছর আগে তাঁর বাবা-দাদুরা জুঁই, বেল, গোলাপ-সহ বিভিন্ন ফুলের নির্যাস থেকে আতর তৈরি করতেন। কিন্তু এখন সেই দিন নেই। মূলত উত্তরপ্রদেশ ও মুম্বই থেকে আমদানি করা আতরই বাজারে পাওয়া যায়। সেই আতরেও এই সব ফুলের গন্ধ থাকে। বকরি ইদ, নিকা (মুসলিম বিবাহ) অনুষ্ঠান-সহ বিভিন্ন পরবেই আতরের চাহিদা আছে বলে তাঁরা জানান। এ ছাড়া, অন্য ধর্মের অনেক মানুষই আতর ব্যবহার করেন বলে দাবি তাঁদের।
বর্ধমানের পার্কাস রোডের ব্যবসায়ী আব্দুল রহমান ও বড় বাজারের জাকির হোসেন বলেন, “অন্য সুগন্ধির তুলনায় আতরের চাহিদা বেশি কারণ এর গন্ধ দীর্ঘ স্থায়ী হয়। শুধু শহরের বাসিন্দাই নন, গলসি, মেমারি, জালামপুর, রায়না, খণ্ডঘোষ থেকেও অনেকে ভাল আতরের খোঁজে আসেন। এই ইদেও তার
ব্যতিক্রম হয়নি।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)