সার কেনাবেচায় নজর। —নিজস্ব চিত্র।
আলু চাষের জন্য নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সারের ভাল চাহিদা থাকে। রাজ্যের যে সব জেলায় ভাল আলু চাষ হয়, সেই হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের মতো জেলাগুলিতে এ বার চাষ শুরু হওয়ার সময় থেকে সারের কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে। ১০:২৬:২৬ সারের ৫০ কিলোগ্রামের বস্তা প্রতি ৩০০-৪০০ টাকা বাড়তি দাম নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেক চাষির। কোথাও আবার ওই সারের সঙ্গে অন্য সার বা অনুখাদ্য নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, এমন অভিযোগও উঠেছে। সারের কালোবাজারি ঠেকাতে রাজ্য কৃষি দফতর যে সব জেলায় আলু চাষ হয়, সেখানে এক জন করে উচ্চপদস্থ আধিকারিককে দায়িত্ব দিয়েছে। সেই সঙ্গে, প্রতিটি ব্লকে ‘টাস্ক ফোর্স’ গঠন করে সার ব্যবসায়ীদের উপরে নজর রাখার সিদ্ধান্তও নিয়েছে কৃষি দফতর।
রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আলু চাষের এলাকা বলে পরিচিত জেলাগুলিতে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই সব জেলায় তাঁরা যাওয়া শুরু করেছেন। প্রথমে সার ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হবে। তার পরেও অভিযোগ মিললে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দাম বেশি নেওয়া তো দূর কথা, কোনও সারের সঙ্গে অন্য কোনও সার বা অনুখাদ্য নিতেও বাধ্য করা যাবে না।’’
রাজ্যে গড়ে সাড়ে চার লক্ষ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। তার মধ্যে হুগলি (৯০ হাজার হেক্টর) ও পূর্ব বর্ধমান (৭২ হাজার হেক্টর) জেলায় সব চেয়ে বেশি চাষ হয়। চাষিরা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ইফকোর তৈরি ১০:২৬:২৬ সারের উপরেই বেশি নির্ভর করেন। কৃষি দফতরের দাবি, প্রয়োজনের তুলনায় ওই সার কেন্দ্র থেকে কম এসেছে।
ইফকোর পূর্বাঞ্চল দফতর সূত্রে জানা যায়, নভেম্বরে হুগলিতে ৭৫ হাজার টন ও পূর্ব বর্ধমানে ৬০ হাজার টন সার লাগে। তাঁদের দাবি, অক্টোবরে সারের রেক তুলনায় কম এসেছে। তবে চলতি সপ্তাহ থেকেই সারের রেক আসার কথা রয়েছে। ১০:২৬:২৬ সারের ঘাটতির কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন জেলা চাষি ও ডিলারদের ওই সারের বিকল্প হিসেবে নাইট্রোজেন, ফসফেট ও পটাশের উপযুক্ত সংমিশ্রণে তৈরি সার দিয়ে চাষের পরামর্শ দিচ্ছেন।
পূর্ব বর্ধমান, হুগলি-সহ বেশ কিছু জেলায় কৃষি দফতরের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকেরা রবিবার ব্যবসায়ীদের দোকানে অভিযান চালান। বেশ কিছু দোকানদারকে সতর্ক করা হয়। বর্ধমান ২ ব্লকে এক ব্যবসায়ী বেশি দাম নিচ্ছেন অভিযোগ পেয়ে কৃষি-কর্তারা দাঁড়িয়ে থেকে সার বিক্রি করেন। পূর্ব বর্ধমানের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মেহেবুব মণ্ডলের দাবি, “আমাদের জেলায় ১০:২৬:২৬ রয়েছে মাত্র ৮,১১১ টন। অক্টোবরেই ৫০% ঘাটতি রয়েছে। নভেম্বরে আরও বেশি ওই সার প্রয়োজন।’’ হুগলির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মদনমোহন কোলে বলেন, “আমরা বৈঠক করে ১০:২৬:২৬ সারের পরিবর্তে বিকল্প সার ও জৈব সারের বিষয়ে প্রচার করছি।’’
রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘প্রতিটি ব্লকে টাস্ক ফোর্স গঠন করে সারের দোকানে বা গুদামে আচমকা পরিদর্শন করতে বলা হয়েছে।’’ রাজ্য কৃষি দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, “আলু চাষের জন্য প্রয়োজনীয় সারের ঘাটতি নেই। একটি নির্দিষ্ট সংস্থার সারের ঘাটতি রয়েছে। তার বিকল্প সার দিয়েও ভাল ফলন হয়, তা জানানোর চেষ্টা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy