অনুশীলনে ব্যস্ত কাটোয়ার ইন্দ্রনীল। -নিজস্ব চিত্র
প্রথম দিন বাবার হাত ধরে বারবেল তুলতে গিয়ে তা পায়ে পড়ে আঘাত লেগেছিল বছর বারোর কিশোরের। তবে থেমে যায়নি সে। বরং ভারোত্তোলনই নেশা হয়ে গিয়েছিল কাটোয়ার কলেজ পড়ুয়া ইন্দ্রনীল চিত্রকরের। দশ বছরের টানা পরিশ্রমে জাতীয় স্তরের একাধিক পদক এখন তাঁর ঝুলিতে।
বছর পাঁচেক বয়স থেকে সাঁতার দিয়ে খেলাধুলার জগতে পা মাধবীতলার বাসিন্দা ইন্দ্রনীলের। বাবা পতিতপাবন চিত্রকর ভারোত্তোলনে জেলা স্তরে চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। তাঁর হাত ধরেই পরে শরীরচর্চা শুরু। তেরো বছর বয়সে যোগ দেন বর্ধমান ওয়েট লিফ্টিং কাউন্সিল আয়োজিত আন্তঃজেলা ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায়। ৩০ কেজি বিভাগে প্রথমও হন ইন্দ্রনীল। সেই শুরু। বছর চারেক পরে মিড ডিস্ট্রিক্ট ফিজিকাল কালচার অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ৬২তম সুভাষ চক্রবর্তী মেন অ্যান্ড উইমেন অফিসিয়াল ওয়েট লিফ্টিং চ্যাম্পিয়নশিপে ৮৭ কেজি বিভাগে প্রথম হয়ে সোনা জেতা, তৃতীয় নেতাজি সুভাষ স্টেট গেমসে যোগ দিয়ে ৮৭ কেজি বিভাগে জেলার প্রতিনিধিত্ব করে তৃতীয় স্থান পাওয়া— সফর চলতেই থাকে।
জাতীয় স্তরে খেলার সুযোগ আসে ২০১২ সালে। ইম্ফলে মণিপুর ওয়েট লিফ্টিং চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজিত ৭৬তম পূর্বভারতীয় ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় ৯৪ কেজি বিভাগে দ্বিতীয় স্থান পান বছর চব্বিশের ইন্দ্রনীল। পরের বছর অসম ওয়েট লিফ্টিং অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত জাতীয় ভারোত্তোলনেও সপ্তম স্থান পান। ২০১৪ সালে বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে জুনিয়র ৯৪ কেজি বিভাগে প্রথম হন তিনি। এ বছর মেদিনীপুরে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতাতেও প্রথম হন তিনি।
ইন্দ্রনীল জানান, পাড়ার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেই দিনে ঘণ্টা পাঁচেক অনুশীলন করেন। তবে কাটোয়ায় উপযুক্ত প্রশিক্ষক না থাকায় সপ্তাহে দু’দিন ছুটতে হয় রিষড়ায়। শৈলেন ডাবসির তত্ত্বাবধানে চলে প্রশিক্ষণ। ইন্দ্রনীলের আক্ষেপ, ‘‘স্যার বিনামূল্যে শেখান বলেই এখনও খেলা চালাতে পারছি।’’ আসবাব ব্যবসায়ী পতিতপাবনবাবুও বলেন, ‘‘সীমিত সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারি করছি।’’ ওয়েট লিফ্টিং অ্যাসোসিয়েশনের জেলার পেট্রোলিং চিফ অঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইন্দ্রনীলের মধ্যে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। ওকে অলিম্পিকের মঞ্চে দেখতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy