কয়লা পাচারের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। প্রতীকী ছবি।
সাইকেল, মোটরবাইকের পাশাপাশি, দুধ ও খাদ্যসামগ্রীর কন্টেনারে কয়লা পাচারেরও অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম বর্ধমানে। আবার বাসের ছাদ থেকেও উদ্ধার হয়েছে প্রচুর কয়লা। এ বার ইসিএলের কয়লা সরবরাহের ‘ই-চালান’ হুবহু নকল করে কয়লা পাচারের চেষ্টার অভিযোগ উঠল। তা-ও বন্ধ কোলিয়ারির নামে। এই নকল ই-চালান ছাপিয়ে কয়লা পাচারের চেষ্টার অভিযোগে সোমবার রাতে রানিগঞ্জের কাশীপুরডাঙা থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের রানিগঞ্জ থানা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত বিট্টু শর্মা ও মোদাসির আলমের বাড়ি যথাক্রমে কাশীপুরডাঙা ও হুসেননগরে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তিনটি চালান। ধৃতদের মঙ্গলবার আসানসোল আদালতে তোলা হলে, পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়।
ওই ই-চালানে এরিয়া ‘জামুড়িয়া কোলিয়ারি’ বলে উল্লেখ রয়েছে। তাতে ফোন নম্বর-সহ বিভিন্ন রকমের দামের উল্লেখও আছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চালানে যে কোলিয়ারির কথা বলা হচ্ছে, তা বন্ধ। ইসিএলের এক আধিকারিকও জানান, এই নামে কোলিয়ারি বহুদিন আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পুলিশ যে চালানটি পেয়েছে, তা ভুয়ো। পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, বেআইনি কাজকর্ম রুখতে লাগাতার অভিযান চলছে। তার সুফলও মিলছে।
এ দিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির দাবি, কৌশল বদলে দুষ্কৃতীরা যে, কয়লা পাচার করছে, এ বিষয়ে তাঁরা দলগত ভাবে পুলিশ কমিশনার ও ইসিএলের সিএমডির কাছে বার বার অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, এই কারবার চলছে শাসক গোষ্ঠীর (তৃণমূল) প্রত্যক্ষ মদতে। তাতে সাহায্য করছে পুলিশ-প্রশাসন ও ইসিএলের একাংশের অসাধু আধিকারিকেরা। তিনি বলেন, “কয়লা পাচারে আধিকারিকেরা যে যুক্ত, তা সিবিআই, ইডি’র তদন্তেও উঠে এসেছে। এই অভিযোগে ইসিএলের প্রাক্তন ও বর্তমান আট জন আধিকারক জেলও খেটেছেন।” তাঁর সংযোজন: “কখনও দুষ্কৃতীরা কয়লার ‘ডিও’ (খোলা বাজারে কয়লা বিক্রির জন্য কোল ইন্ডিয়া নিলাম পদ্ধতিতে কয়লা বিক্রির বরাত দেয়, তাকে ‘ডেলিভারি অর্ডার’ (ডিও) বলা হয়)-এর নথিপত্র নিয়ে কয়লা পাচার করছে। এ বার নকল চালান ছাপিয়ে কয়লা পাচারের চেষ্টার অভিযোগও প্রকাশ্যে এল।”বেশির ভাগ কয়লায় পাচার হচ্ছে ইসিএলের বৈধ খনি থেকে বলে দাবি জিতেন্দ্রর। সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরী মনে করেন, ইসিএলের কোনও কার্যালয়ের যোগাসাজস ছাড়া এটা সম্ভব নয়। এ নিয়ে ভাল ভাবে তদন্ত হওয়া উচিত।
বিরোধীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “যে কোনও ধরণের অবৈধ কারবার আটকাতে পুলিশ-প্রশাসন লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে। তার জেরে একের পর অবৈধ কারবারী ধরাও পড়ছে। বিরোধীদের উচিত পুলিশের এই ভূমিকার প্রশংসা করা। তা না করে, তাঁরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তৃণমূল ও রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সাধারণ নাগরিকদের বিভ্রান্ত করতে চাইছেন।”
পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক। ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ইসিএলের জিএম (সিকিওরিটি) শৈলেন্দ্রকুমার সিংহও জানিয়েছেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। তদন্তের ক্ষেত্রে সাহায্য চাইলে সংস্থার নিরাপত্তা বিভাগ পুলিশকে সব রকম ভাবে সহায়তা করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy