Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

লেখা শেষে মাটিতে পুঁতে দিলেই কলম থেকে গাছ

দুর্গাপুরের ৫৪ ফুট অঞ্চলের তপোবন এলাকার বাসিন্দা শরদিন্দু চন্দ বিভিন্ন মেলায় হাজির হন এই কলম নিয়ে। তিনি জানান, পুরুলিয়ার একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা পরিবেশবান্ধব এই কলম তৈরি করে থাকেন।

বইমেলায় সেই কলম। নিজস্ব চিত্র

বইমেলায় সেই কলম। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯ ০০:৪৯
Share: Save:

কালি শেষ হয়ে গেলে মাটিতে ফেলে বা পুঁতে দিতে হবে কলম। জল পেলেই তা থেকে গজিয়ে উঠবে ফুল বা আনাজের চারা। এমন কলমের খবর শুনে দুর্গাপুরের বইমেলায় মানুষজন ভিড় জমাচ্ছেন একটি স্টলে।

দুর্গাপুরের ৫৪ ফুট অঞ্চলের তপোবন এলাকার বাসিন্দা শরদিন্দু চন্দ বিভিন্ন মেলায় হাজির হন এই কলম নিয়ে। তিনি জানান, পুরুলিয়ার একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা পরিবেশবান্ধব এই কলম তৈরি করে থাকেন। গত বছর ডিসেম্বরে কলম বাজারজাত করার বিষয়ে তাঁদের সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ হয় ওই গোষ্ঠীর। এই উদ্যোগের পিছনে রয়েছেন পুরুলিয়ায় জাতীয় গ্রামীণ লাইভলিহুড মিশনের পাড়া ব্লকের প্রকল্প ম্যানেজার মৌমিতা মাহাতো। তিনি জানান, কেরলের এক মহিলা এমন এক কলম নিয়ে তাঁদের এলাকায় এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে বিশদ জেনে নেন তিনি। এর পরে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েদের জন্য কেরলের ওই মহিলাকে দিয়ে দু’দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। সেই দু’দিনেই মহিলারা প্রায় তিন হাজার কলম তৈরি করেন। সরকারি নানা অনুষ্ঠানে সেই কলম সরবরাহ করে ভাল সাড়া পান তাঁরা।

মৌমিতাদেবী জানান, বিশেষ ধরনের কাগজের উপরে রিফিল রেখে কাগজ মুড়ে নিয়ে আঠা দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। পিছন দিকের ফাঁকা অংশে নানা ছোট গাছের অল্প কয়েকটি বীজ দিয়ে উপরে কাগজ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কৃষ্ণচূড়া, পেঁপে, নিম, পলাশের মতো বড় গাছের ক্ষেত্রে প্রতি কলমে একটি করে বীজ দেওয়া হয়। কালি শেষ হয়ে গেলে কলমটি মাটিতে পুঁতে দিলে তার ভিতরে থাকা বীজ অঙ্কুরিত হয়ে চারা বেরোয়। ধীরে-ধীরে গাছ বড় হতে থাকে। এক সময় জায়গা ভরে ওঠে ফুল-ফলে। মৌমিতাদেবী বলেন, ‘‘ইদানীং এক বার লিখে ফেলে দেওয়ার মতো কলমই বেশি ব্যবহার হয়। তাই পরিবেশবান্ধব এই কলমের চাহিদা বাড়ছে।’’

এখনও পর্যন্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রায় ২১ হাজার কলম তৈরি করেছে। কলম বাজারজাত করার দায়িত্বে থাকা দুর্গাপুরের সংস্থাটির অন্যতম প্রতিনিধি শরদিন্দুবাবু জানান, গত তিন মাসে কলকাতা, শিলিগুড়ি, দুর্গাপুর-সহ রাজ্যের নানা জায়গায় বিভিন্ন মেলা-উৎসবে এই কলম বিক্রির ব্যবস্থা করেছেন। কলকাতার বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়াদের কাছে তাঁরা এই কলম নিয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কলমের উপর নকশার কাজ করে আরও আকর্ষণীয় করে তুলি আমরা। দিন-দিন আগ্রহ বাড়ছে। অনলাইনেও বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দুর্গাপুরে বইমেলায় শরদিন্দুবাবুর স্টলেও এই কলম নিয়ে আগ্রহীরা ভিড় জমাচ্ছেন। শ্যামলেন্দু বসু, স্নিগ্ধা মিত্রেরা বলেন, ‘‘কলম যে এমন হতে পারে তা ভাবিনি। পরিবেশের স্বার্থে এই কলমই ব্যবহার করব ভাবছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Plantation Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE