পূর্বস্থলীর চুপি পাখিরালয়ে বছরের প্রথম দিনে পর্যটকেরা৷ নিজস্ব চিত্র।
বড়দিনে উৎসবের মেজাজে যে ভিড় শুরু হয়েছিল জেলার নানা দর্শনীয় স্থান ও পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে, তা বজায় রইল নতুন বছরের প্রথম দিনেও। বর্ধমান শহরের নানা বেড়ানোর জায়গায় যেমন এ দিন ভিড় জমে, তেমনই পূর্বস্থলীর চুপি বা আউশগ্রামের ভাল্কি মাচানের মতো পর্যটন স্থলগুলিতেও বাইরে থাকা আসা পর্যটকের ভিড় দেখা গিয়েছে। সেই সঙ্গে ছিল চড়ুইভাতির ভিড়।
বর্ধমান শহরে গোলাপবাগ মোড় থেকে কৃষ্ণসায়ের পার্কের মধ্যে রাস্তার গা ঘেঁষে রয়েছে মেঘনাথ সাহা প্ল্যানেটরিয়াম, রমানাবাগান চিড়িয়াখানা এবং বিজ্ঞান কেন্দ্র। রমনাবাগান সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়দিনে প্রায় সাড়ে তিন হাজার দর্শক পার্কে এসেছেন। গত বছরও সে দিন এই রকমই দর্শক হয়েছিল। তবে এ বছর শীতের প্রথম থেকেই রমনাবাগানে গড় দর্শক সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিনই গড়ে হাজার দেড়েকের ভিড় হয়েছে। ছুটির দিনগুলিতে তা আড়াই হাজার পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে। জেলা বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী জানান, বছরের শেষ দিনে এই মিনি জু-তে দর্শক সংখ্যা ছিল ২,৬০০। সোমবার সে সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে অনুমান।
বিজ্ঞান কেন্দ্রেও গত এক সপ্তাহে ভিড় বেড়েছে। কেন্দ্রের জেলা আধিকারিক নিখিলেশ বিশ্বাস জানান, বড়দিনের থেকে বছরের শেষ দিনে এখানে ভিড় বেশি ছিল। রবিবার প্রায় ২,৩০০ জন আসেন। সোমবার তারও বেশি লোক এসেছিলেন বলেকর্তাদের আশা। কৃষ্ণসায়ের পরিবেশ কানন, মেঘনাথ সাহা প্ল্যানেটরিয়ামেও এ দিন ভাল ভিড় দেখা যায়। রমনাবাগানে আসা খণ্ডঘোষের বক্তিয়ার শেখ বলেন, ‘’৩১ ডিসেম্বর পিকনিক করেছি। বছরের প্রথম দিনে বেড়াতে বেরিয়েছি। বিজ্ঞান কেন্দ্র, চিড়িয়াখানা, সব দেখে ফিরব।’’ বিজ্ঞান কেন্দ্রে আসা ঝুমা মণ্ডল, সুতপা বসুরা বলেন, ‘‘সকাল থেকে ঠান্ডার আমেজ রয়েছে। রোদ গায়ে মেখে ঘুরতেবেশ লাগছে।’’
পূর্বস্থলী ১ ব্লকের চুপি পাখিরালয় এলাকায় পিকনিকের ভিড় ছিল এ দিন। কল্যাণী মণ্ডল, জয়ন্ত জানারা বলেন, ‘‘প্রতি বার এই দিনটা এখানেই পিকনিক করে কাটাই।’’ পাখিরালয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকা এক যুবক বলেন, ‘‘পাখিরালয় লাগোয়া কোনও কটেজ খালি নেই। সকাল থেকে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে মানুষজন আসছেন। তবে গতবারের তুলনায় এ বার ভিড় কিছুটা কম।’’ এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, এ বার পরিযায়ী পাখি কম এসেছে। সে কারণে ভিড় কিছুটা কম হতে পারে।
জঙ্গল অধ্যুষিত আউশগ্রামে ভাল্কি মাচান, যমুনাদিঘি মৎস্য প্রকল্প, দিগনগরের চাঁদনি, দ্বারিয়াপুরের ডোকরাপাড়া, কালিকাপুরের রাজবাড়ির মতো জায়গাগুলিতে দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকেরা এসেছিলেন। মাচান কর্তৃপক্ষের তরফে শুভেন্দু মণ্ডল জানান, সেখানে অতিথিনিবাসের ৭টি ঘর এবং একটি ডর্মিটরির সবই দু’দিন ভর্তি ছিল। যমুনাদিঘি মৎস্য প্রকল্পের অতিথিনিবাসের সমস্ত ঘরও রবিবার ভর্তি ছিল। সোমবার অনেকেজঙ্গলে পিকনিকে যান। এ দিন জনা তিরিশ পর্যটক ছিলেন এখানে। এ দিন আদুরিয়া জঙ্গল এলাকায় ময়ূর দেখার জন্য অনেক পর্যটক এলেও, চড়া আওয়াজের কারণে ময়ূরেরদেখা মেলেনি বলে বনকর্মীদের একাংশের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy