জাতীয় সড়কে অবাধে চলছে টোটো। ছবি: সুপ্রকাশ চৌধুরী
ঘটনা ১, সোমবার বর্ধমান শহরের কাছে ঝিঙুটি মোড়ে বর্ধমান-সিউড়ি জাতীয় সড়কে (২বি) ট্রাকের সঙ্গে টোটোর ধাক্কায় টোটো চালক ও একই পরিবারের চারজন মারা যান।
ঘটনা ২, ওই দিনই বিকেলে গলসির সাড়ুলে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে টোটো ও মোটরবাইকের ধাক্কায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। তিনজন জখম হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে
ভর্তি হন।
একই দিনে দুটো ঘটনা প্রশাসনের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, নিয়ম অমান্য করে রাজ্য সড়ক তো বটেই, জাতীয় সড়ক কিংবা এক্সপ্রেসওয়ের উপর দিয়েও টোটো ছুটছে। আগেও দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে টোটো-দুর্ঘটনা ঘটেছে। দু’বছর আগে নবমীর রাতে শক্তিগড়ের স্বস্তিপল্লি থেকে টোটো করে বড়শুলে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার সময়ে দুর্ঘটনায় চার জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। গত বছর ২০ অক্টোবর কালনা রোডে বালিয়াড়া গ্রামের কাছেও ট্রাকের ধাক্কায় এক টোটো চালক ও তিন যাত্রী প্রাণ হারান।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই পরিবহণ দফতরের একটি নির্দেশিকায় জানানো হয়, জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক তো বটেই নিয়মিত বাস পরিষেবা রয়েছে, এমন রাস্তাতেও টোটো চালানোয় অগ্রাধিকার দেওয়া যাবে না। যে সব জায়গায় পরিবহণ ব্যবস্থা ভাল নয়, সেখানেই টোটোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ওই নির্দেশের পরে পরিবহণ দফতর ও পুলিশ টোটো চলা নিয়ে কড়াকড়ি শুরু করে। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে টোটো চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কয়েক মাস পরেই এক্সপ্রেসওয়েতে টোটোর দাপট ফিরে এসেছে।
সোমবারের দুর্ঘটনার পরেও জাতীয় সড়কে অবাধে টোটো চলতে দেখা গিয়েছে। নবাবহাটের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে লাইন দিয়ে টোটো দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে, এমনও দেখা গিয়েছে। আবার বর্ধমান-সিউড়ি রোডেও ট্রাকের ফাঁক গলে টোটো চলার ছবি সামনে এসেছে। জেলা পুলিশের কর্তাদের দাবি, টোটোর মতো ধীর গতির গাড়ির জন্য বারবার জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রচুর মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। জাতীয় সড়কে টোটো চলাচল কমানোর জন্য পুলিশ প্রতিদিনই আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) কল্যাণ সিংহ রায় বলেন, ‘‘জেলা জুড়ে প্রতিদিনই অভিযান চালানো হয়। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে টোটো উঠলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’
প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে বর্ধমান শহর লাগোয়া বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। আবার সিউড়ি রোডের গ্রামগুলির যাতায়াতের বড় ভরসা টোটো। ফলে কিছুটা ‘ছাড়’ দেওয়া হয় অনেক সময়। তবে একের পর এক দুর্ঘটনা বলছে, এ বার রাশ টানা জরুরি। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সুপ্রিয় অধিকারী বলেন, ‘‘জেলা পরিবহণ দফতরের বোর্ড মিটিংয়ে এ বিষয়ে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে।’’ বর্ধমান সদর ইকো রিকশা পুলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অভিজিৎ নন্দীর দাবি, ‘‘শহরের টোটো জাতীয় সড়কে ওঠে না। গ্রামীণ এলাকার যে টোটো সেগুলিই জাতীয় সড়কে যায়। আমরা সকলকেই নিয়ম মেনে চলতে বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy