মঙ্গলকোটে আটক। নিজস্ব চিত্র
ফের ভিন্ জেলা থেকে ধান নিয়ে আসার অভিযোগে গাড়ি আটক হল জেলায়। ফড়ে ধরতে রবিবার দিনভর অভিযান চালাল জেলা পুলিশ। আটটি থানা এলাকা থেকে ২০টি গাড়ি আটক করা হয়। ১১১৭ কুইন্টাল ধান বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিনা নথিতে ধান নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও নথি দেখাতে না পারায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমাদের ধারণা, সরাসরি চাষির কাছ থেকে ধান কেনা হয়নি। সে জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ধান বিনা নথিতে পাচার করা হচ্ছিল। এই রকম অভিযান চলবে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলকোট, আউশগ্রাম, কাটোয়া, মাধবডিহি, নাদনঘাট-সহ নানা এলাকায় একের পর এক ধানের গাড়ি ধরা হয়। তার মধ্যে ২০টি গাড়ির চালক কোনও নথি দেখাতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ আটক করে রাখার পরেও নথি দেখাতে না পারায় সন্ধ্যায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ধান পাচারের অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলকোট থানায় দু’টি পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বাকি থানাগুলিতে একটি করেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বীরভূম থেকে তিনটি গাড়িতে ধান বোঝাই করে বর্ধমানের চালকলে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল রবিবার। মঙ্গলকোট থানার পুলিশ রাস্তায় নজরদারি চালানোর সময়ে গাড়িগুলি আটক করে। শনিবার আউশগ্রামেও বীরভূম থেকে আসা দু’টি গাড়ি আটক করেছিলেন প্রশাসনের কর্তারা। তাঁরা জানান, গাড়িগুলি অবন সেতু পেরিয়ে বর্ধমানের চালকলে ধান বিক্রি করতে যাচ্ছিল। কিন্তু চালকেরা কোনও বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
জেলায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হওয়ার পর থেকেই ফড়েদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ উঠেছে বারবার। আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে ফড়েরা চাষিদের কাছ থেকে অল্প দামে ধান কিনে জেলার চালকলগুলিতে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ আসছিল পুলিশ-প্রশাসনের কাছে। এর পরেই বিভিন্ন এলাকায় আধিকারিকেরা নজরদারি ও অভিযান শুরু করেন। শনিবার খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নিজে ধান কেনার প্রক্রিয়া দেখতে কালনা মহকুমার কয়েকটি কিসানমান্ডি ঘুরে যান।
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, এখনও পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমানে সহায়ক মূল্যে দেড় লক্ষ টন ধান কেনা হয়েছে। অত্যাবশকীয় পণ্য নিগমও ধান কিনছে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘জেলা জুড়ে অভিযান চলছে। চালান না থাকলে ধান বোঝাই গাড়ি পুলিশ আটকাবে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চালান দেখাতে পারলে গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হবে।
চালকল মালিক সমিতি জানায়, জেলায় এ বছর প্রায় ১৯ লক্ষ টন ধান উৎপন্ন হয়েছে। এর মধ্যে সরকার কিনবে ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টন। বাকি ধান ষিদের কাছ থেকে চালকলগুলিই কিনবে। সব চালকল সরকারি প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই। বর্ধমান চালকল মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশ মতো চাষিদের কাছ থেকে চালান নিয়ে ধান কিনুক চালকলগুলি—এই বার্তা দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy